নানা আয়োজনে ৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় ‘বাংলাদেশ দিবস’ পালিত হচ্ছে। শুক্রবার (৪ মার্চ) ছিল এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন।এদিন বিকেলে প্রথম ভাগে ‘সোনার বাংলার স্বপ্ন যাত্রা শেখ মুজিব থেকে হাসিনা’ এ শিরোনামে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বাঙালি কখনো ঘরকুনো বাঙালি ছিল না, বাঙালি সর্বদা ছিল আন্তর্জাতিক। আমি কখনো কখনো কবিতা লিখি বলে মনে করি, আবহমান সময়ে হাজার হাজার কোটি কোটি বছর কোনো সময় নয়। এক মুহূর্তে আমি যদি বলি আমি আছি তাহলে আমার থাকা হয়। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারে সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ’ এক কবির যুক্তি আর এক রাজনৈতিক কবির যুক্তি, কী করে একটি ক্ষণে নিয়ে এসেছে তা আমরা সবাই জানি।৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে মুহূর্তে এ কথা বললেন তার আগে বাংলার সমস্ত ইতিহাস মিথ্যে হয়নি, বরং সত্যে পরিণত হয়েছে। সেই কথাগুলো একটু আগেই বলে গেছেন আমাদের পবিত্র সরকার।কবি নূরুল হুদা আরও বলেন, বাঙালির ইতিহাস কী ৭ মার্চ থেকে? বা ১৭ মার্চ থেকে? কিংবা ২৫ মার্চ থেকে? ২৬ মার্চ থেকে? সেই বিপন্ন সময় থেকে? স্বপ্নভঙ্গ নাকি স্বপ্ন উজ্জয়নের সময় থেকে? অবশ্যই নয়। বাঙালির ইতিহাস হিমালয় থেকে বঙ্গীয় অববাহিকা- যে অববাহিকা হিমালয় থেকে সুন্দরবন হঠাৎ বাংলাদেশ, যেই পদ্মা-গঙ্গা বহমান তার পাশে যে কমল মানুষরা জন্ম নিয়েছে, সেখানেই বাঙালির ইতিহাস সৃষ্টি। অর্থাৎ হাজার বছরের ইতিহাস যাদের আছে, সেই লগ্ন থেকে বাঙালির ইতিহাস।
সেই মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গবন্ধুর ৫৫ বছরের ইতিহাসে মুক্তি এবং যুক্তির চিত্র দিয়ে তৈরি করলেন সোনার বাংলাদেশ। আর সেই নীতির শিক্ষার্থী হিসেবে তার কন্যা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখনই ‘সোনার বাংলার স্বপ্ন যাত্রা শেখ মুজিব থেকে হাসিনা’ বাস্তবিক অর্থে সেমিনারে যুক্তিযুক্ত বিষয়।পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কবি ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেন, হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু এক অবিস্মরণীয় নেতা। ৬৫ সালের পরে ৬৬ সালের বঙ্গবন্ধু খুলনার সার্কিট হাউসের ময়দানে যে কথা বলেছিলেন তার ওপর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। ৬৬ সালের ১৯ জানুয়ারি যে কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ আজও তা মেনে চলে। সেই নীতি সেই শিক্ষা নিয়ে তার কন্যা প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নত করে চলেছেন।এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক-গবেষক সুভাষ সিংহ রায়, ভাষা ও সমাজকর্মী ড. ইমানুল হক, বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসানসহ বিশিষ্টজনরা।এছাড়া এদিন দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনিসহ বিশিষ্টজনরা।উল্লেখ্য, ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ এ নিয়ে কোনো দেশ তৃতীয় বার এ শিরোপা পেল। স্বভাবতই কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশকে নিয়ে কৌতুক ও উৎসাহ বাড়ছে। সে কারণে কলকাতাস্থিত বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের নানা আয়োজনে বাংলাদেশ দিবস যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে।