প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গের খোঁজ মিলেছে দিল্লির বিধানসভায়। এই গোপন সুড়ঙ্গ সেখানকার একটি কক্ষে কৃত্রিম সবুজ ঘাসের কার্পেট কেটে পাওয়া যায়। সুড়ঙ্গের মুখে লোহার দরজা সরাতেই দেখা মেলে ওই গভীর সুড়ঙ্গপথের।
ধারণা করা হচ্ছে, সুড়ঙ্গটি লাল কেল্লা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। দিল্লি বিধানসভা থেকে লাল কেল্লার দূরত্ব সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের কিছু বেশি। সেক্ষেত্রে সুড়ঙ্গটিও ততটাই লম্বা হবে।
দিল্লি বিধানসভার স্পিকার রাম নিবাস গোয়েল জানান, নথিপত্র অনুযায়ী সুড়ঙ্গটি বিধানসভাকে লাল কেল্লার সাথে যুক্ত করেছে। ব্রিটিশরা বিপ্লবী বন্দিদের কারাগারে আনা-নেয়ার সময় ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে এ সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতো বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে যখন আমি এমএলএ হয়েছি, তখন থেকেই শুনছি এখানে একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে, যা লাল কেল্লা পর্যন্ত গেছে। এতদিন পর সেই সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে তিনি জানান, এখন আমরা সুড়ঙ্গের মুখ পেলেও এটি আর খনন করছি না। কারণ মেট্রো প্রকল্প, নর্দমা স্থাপনসহ বিভিন্ন কারণে স্থানে স্থানে এ সুড়ঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯১২ সালে কলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে আনে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে দিল্লি বিধানসভাকে, যা কেন্দ্রীয় আইনসভা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল, ১৯২৬ সালে আদালতে পরিণত করা হয়। এরপর ব্রিটিশরা এ সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে বিপ্লবী বন্দিদের আদালতে আনতো। কারণ সে সময়ে এসব বিপ্লবী বন্দিই ছিল সবচেয়ে বিপজ্জনক বন্দি বা আসামি।
রাম নিবাস গোয়েল জানান, আমরা সবাই এখানে একটি ফাঁসির কক্ষের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতাম। স্বাধীনতার ৭৫তম বছরে এসে আমরা সেটি খুঁজে পেয়েছি। আমরা সেই কক্ষটিকে স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের একটি স্মৃতিকেন্দ্রে পরিণত করতে চাই। আগামী বছরের মধ্যেই আমরা সেটি দর্শক-পর্যটকদের জন্য খুলে দিতে চাই। এরই মধ্যে এ বিষয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ইতিহাসবিদদের ধারণা অনুযায়ী, প্রায় ১০০ বছর আগে লাল কেল্লা ও দিল্লি বিধানসভার মধ্যে এ সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হয়েছিল। স্থাপনা দুটি যথাক্রমে উত্তর-পূর্ব দিল্লি ও উত্তর দিল্লিতে অবস্থিত। লাল কেল্লা ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মুঘল সম্রাট শাহজাহান তৈরি করেছিলেন।
সূত্র: ইন্ডিয়াটুডে