আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় একটি ম্যাসাজ পার্লার ও দুটি বিউটি স্পায় গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ছয় এশীয় নারীসহ আট জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার (স্থানীয় সময়) ওই এলাকার ঘটনাগুলো ঘটেছে। খবর রয়টার্সের
পুলিশ জানিয়েছে, সবগুলো ঘটনাই এক ব্যক্তি ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এবং সন্দেহভাজনকে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর জর্জিয়ার রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে আটলান্টা শহর থেকে প্রায় ৪০ মাইল উত্তরে চেরোকি কাউন্টিতে। চেরোকি কাউন্টি শেরিফ বিভাগের ক্যাপ্টেন জে বেকার জানান, স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে অ্যাকওয়ার্থ এলাকায় ইয়ং’স এশিয়ান ম্যাসাজ পার্লারে গোলাগুলিতে চার জন নিহত ও আরেকজন আহত হন। এখানে নিহতদের মধ্যে দুই জন এশীয় বংশোদ্ভূত নারী, একজন শ্বেতকায় নারী ও একজন শ্বেতকায় পুরুষ এবং আহত ব্যক্তি হিস্পানিক পুরুষ।
পরের ঘটনা দুটি ঘটে জর্জিয়ার রাজধানী আটলান্টায়। সংবাদ সম্মেলনে শহরটির পুলিশ প্রধান রডনি ব্রায়ান্ট জানান, সন্ধ্যা ৬টার (স্থানীয় সময়) একটু আগে ‘ডাকাতি হচ্ছে’ খবর পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা একটি বিউটি স্পাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ তিন নারীকে মৃত অবস্থায় পান।
এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলাকালেই একই সড়কের আরেকটি স্পা থেকে পুলিশ কর্মকর্তাদের ফোন করা হয়, সেখানে গিয়ে গুলিবিদ্ধ আরেক নারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়, জানান ব্রায়ান্ট। আটলান্টায় নিহত চার জনই এশীয় বংশোদ্ভূত বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে আটলান্টা থেকে ১৫০ মাইল দক্ষিণে ক্রিস্প কাউন্টি থেকে রবার্ট অ্যারন লংকে (২১) আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তিনি চেরোকি কাউন্টির উডস্টকের বাসিন্দা। বেকার জানান, এই একই সন্দেহভাজন তিনটি গোলাগুলির ঘটনারই বন্দুকধারী বলে তদন্তকারীদের ‘দৃঢ় বিশ্বাস’।
কী কারণে এদের খুন করা হয়েছে সে সম্পর্কে সম্ভাব্য কোনো ধারণা দেননি আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা। নিহতরা জাতিগত বা বর্ণগত বিদ্বেষের শিকার কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তাও পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক টেলিভিশন বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এশিয়ান-আমেরিকানদের প্রতি ঘৃণাজনিত অপরাধ ও বৈষম্যের ঘটনা বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়েছিলেন; এর দুই দিনের মধ্যেই এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠীগুলোর ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হওয়ার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেটিকে বারবার ‘চায়না ভাইরাস’ অভিহিত করে এশীয়দের প্রতি ঘৃণার এ ধারা উস্কে দিয়েছেন।