গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাংচুরের দায়ে সাবেক এমপিসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামী কার্যালয়ে একদল দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে টেবিল চেয়ার ভাংচুরসহ দেয়ালে লাগানো পিভিসি ও পোস্টার ছিড়ে ফেলার ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের দুটি গ্রুপ পৃথক পৃথক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। তারা অফিস ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানায়। অবশেষে ঘটনার ৪ দিন পর ২৫ ফেব্রুয়ারি বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে এ এ এম আলতামাসুল ইসলাম প্রধান বাদি হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভাধীন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামস্থ (গরুহাটি) আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় অফিস কক্ষ, বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হইয়া পার্টি অফিসে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক ভাংচুর করিয়া ক্ষতিসাধন করত: ভয়ভীতি প্রদান করাসহ হুকুম দানের অপরাধে ২৫ ফেব্রুয়ারি গোবিন্দগঞ্জ থানার মামলা নং-৫৩, জিআর নং-৯১; ধারা ১৪৩/৪৪৮/৪২৭/৫০৬/১১৪ পেনাল কোড-১৮৬০।
মামলায় উল্লেখিত আসামীদের মধ্যে রয়েছে- গোবিন্দপুরের (কুঠিবাড়ী) মৃত কাজেম উদ্দিনের পুত্র আবুল কালাম আজাদ (৬৩), বটতলা (খলসী) গ্রামের বুলু মিয়ার ছেলে শাকিল আলম বুলবুল (৩৫), শ্রীপতিপুর (ছয়ঘড়িয়া) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে হামিদুল হক (৩১), বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত আ. গনি ফকিরের ছেলে শাহীন আকন্দ (৪৭), পান্থাপাড়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে শিমুল মিয়া (২৮), প্রভুরামপুর গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে জাহিদ রিফাত (৪৫), সিংগা গ্রামের নজমল হকের ছেলে রুবেল (৩১), আরজি খলসী গ্রামের কাসেম আলীর ছেলে রুকু মিয়া (২৭), চক মানিকপুর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মজিদুল ইসলাম পুতুল, খলসিচাঁদপুর গ্রামের দুলাল (৩৫), তরফকামাল গ্রামের আ. ওয়াহেদের ছেলে চয়ন মিয়া (২৯), মাগুড়া (কেশবপুর) গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে জাফু (৪২), একই গ্রামের লোকমানের ছেলে লেবু (২৫), বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামের ঠাণ্ডা মিয়ার ছেলে বাবুল (৩০), দুর্গাপুর গ্রামের শামছুলের ছেলে নান্নু (২৭), হীরকপাড়ার বাদশা মিয়ার ছেলে রাসেল, বোয়ালিয়া গ্রামের সাজু মিয়ার ছেলে শিমুল (২৩), বর্ধনকুঠি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মামুন মিয়া (২৬), তরণীপাড়া গ্রামের বাবু ইসলামের ছেলে দেলোয়ার (৩৫), মাস্তা গ্রামের আ. রহিমের ছেলে রাফসান জানী স্বর্নব (২৮), শিল্পপাড়া গ্রামের হামির উদ্দিনের ছেলে জাকির (৩২), পান্থাপাড়া গ্রামের রোস্তমের ছেলে আইনুল (৩২), চকগোবিন্দ (চাষকপাড়া) গ্রামের আবু হোসেনের ছেলে কাইয়ুম, একই গ্রামের বাদশা শেখের ছেলে মিলন (৩২), পূর্ব পান্থাপাড়া (কানিপাড়া) গ্রামের রাজা মিয়ার ছেলে ফিরোজ (২৯), পান্থাপাড়া গ্রামের আমজাদের ছেলে নুরুন্নবী (২২), একই গ্রামের জেলালের ছেলে পারভেজ (২৩), বকশীচর (মানকাপাড়া) গ্রামের মৃত সোলেমানের ছেলে জাহিদ হাসান সিজু (৩০), বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে জাহিদ (৩৩), গোবিন্দপুর (কুঠিবাড়ী) গ্রামের আরাফাত রহমান অহন (২৩), শ্রীপতিপুর (ছয়ঘড়িয়া) গ্রামের মিজানের ছেলে আশিক, শাখাহাতি বালুয়া গ্রামের আ. ওয়ারেছের ছেলে নয়ন মিয়া (৩২)সহ অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনের উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলা সম্পর্কে বাদীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে আমি দায়িত্ব মনে করে এ মামলাটি দায়ের করি।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অপরদিকে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মেহেদী হাসানের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো আসামী গ্রেফতার করা হয়নি।