
সীমান্ত থেকে আটকের পর কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর হওয়া আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে র্যাবের হাতে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন নির্যাতনে নিহত রাহয়ানের মা সালমা বেগম।
সালমা বেগম বলেন, আকবরকে কিন্তু পুলিশ, পিবিআই কেউ গ্রেপ্তার করেনি। তাকে আটক করেছে জনগণ। এজন্য আমি জনগনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ তারা বুঝতে পেরেছেন সন্তানহারা মায়ের আকুতি। তাই তারা আকবরকে আটক করেছেন। এখন আমার দাবি হচ্ছে, আকবরকে যেন পুলিশ, পিবিআই কারো কাছে হস্তান্তর না করে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত রোববার গভীর রাতে ভারতের দনা সীমান্ত এলাকার খাসিয়াদের হেডম্যানরা রায়হান হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত এসআই আকবরকে আটক করে তাদের হেফাজতে রাখে। পরে সোমবার দুপুর ১টার দিকে ভারতীয় খাসিয়ারা আকবরকে বাংলাদেশ সীমান্তে স্থানীয় গরু ব্যবসায়ীসহ লোকজনদের কাছে বুঝিয়ে দেন। পরে এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে থানা পুলিশ ও জেলা পুলিশের একটি টিম তাকে জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে কানাইঘাট থেকে আকবরকে সিলেটের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তাই বিকাল থেকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের আশপাশ এলাকায় সিলেট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এক প্রতিক্রিয়ায় রায়হানের মা আরও বলেন, আজ এতদিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবুও আমার মন কিছুটা শান্তি পেয়েছে। এজন্য মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারাই আকবরকে আটক করেছেন।
আকবরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে সালমা বেগম বলেন, আমার ছেলের শরীরে ১১১টি আঘাত। তাই আমি চাইব আকবরকেও যেন এমন শাস্তি দেয়া হয় যাতে বাংলার মানুষ দেখতে পারে। আর আমার রায়হানের আত্মাও শান্তি পায়, তাতে মা হিসেবে আমিও শান্তি পাব।
অপরদিকে আকবরকে সিলেটে নিয়ে আসার পর সিলেট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এক প্রেস কনফারেন্সে অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এদিকে আকবরকে সিলেটে নিয়ে আসার খবরে বিক্ষুব্ধ জনতার ঢল নামে সিলেটের কোর্ট পয়েন্ট এলাকাসহ পুলিশ সুপার কার্যালয় ও বন্দরবাজার পুলিশ ফাড়ির আশপাশ এলাকায়।
প্রসঙ্গত, ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে গুরুতর আহত হন রায়হান। তাকে ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহীসহ পুলিশ সদসরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান।