
মোঃ আলমগীর ইসলাম, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
রাষ্ট্র তথা বর্তমান সরকার যখন নারীর উন্নয়নে বদ্ধপরিকর, ঠিক এই মুহুর্তেই সামাজিক উন্নয়নে নামধারী আশা এনজিও’র এক অসহায় ঋণ গ্রহীতা মহিলা মাত্র ৩ মাসের ঋণ খেলাপীর দায়ে আশা এনজিও’র আদালতে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী হওয়ায় পুলিশ সেই মহিলাকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন। এমন ঘটনা বর্তমান সমাজে কি দুঃখ জনক নহে?
মামলা ও বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌর এলাকার কৃষ্টচাঁদপুর গ্রামের মিঃ রহমানের স্ত্রী মাছুমা বেগম (৪২) বিরামপুরের আশা নামক এনজিও অফিস থেকে গত ২৭/০৯/২০১৮ইং তারিখে ১ বছর মেয়াদে ৭০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। সুদ সহ ঋণের টাকা কিস্তি আকারে পরিশোধ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২৭/০৯/২০১৯ইং সালে তার ঋণের মেয়াদ ১ বছর শেষ হয়। মেয়াদ কাল শেষ হওয়া পর্যন্ত ঋণ গ্রহীতার ৩৬ হাজার ৯ শত ৭৩ টাকা খেলাপী পড়ে। পরিবারে স্বামীর অসুস্থ্যতায় দারিদ্রতার রোষানলে খেলাপী টাকা পরিশোধ করতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়ে। কিন্তু মেয়াদ শেষে বকেয়া প্রদানে ৩ মাস যেতে না যেতেই সেই আশা এনজিও গত ১৬/০১/২০২০ইং তারিখে ঋণ গ্রহিতা মাছুরা বেগমের নামে আদালতে মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং- ১২৩সি/২০২০। এরই প্রেক্ষিতে চলতি বছরে চলমান করোনা ক্রান্তিকালের মধ্যে ঋণ গ্রহীতার নামে আদালত হইতে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হয়। ফলে বিরামপুর থানা মাছুরা বেগমকে গ্রেফতার করে ২২/১০/২০২০ইং তারিখ বৃহস্পতিবার (আজ) আদালতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে বিরামপুর আশা এনজিও অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মশফিকুর রহমান এবং আঞ্চলিক ম্যানেজার আনিসুর রহমানের সাথে আলাপকালে দায় সারা ভাবে তারা সাংবাদিকদের জানান আমরা বুঝতেই পারিনি যে, মাছুরা বেগমের নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। তাদের এমন হেয়ালিপনা যেন অনেকটাই হাস্যকর, কারণ যাদের দ্বারা সামান্য ঋণ অনদায়ে অসহায় নারীর উপর মামলা দিয়ে চালানো হল মানসিক নির্যাতন, তাদের মুখে এমন কথা যেন মেনে নিতে পারছে না এলাকার সাধারণ মানুষ। তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, সামাজিক ভাবে আশা এই এনজিও দ্বারা কিভাবে নারীর উন্নয়ন সম্ভব? প্রশ্নবিদ্ধ সমাজ, প্রশ্নবিদ্ধ জাতি।
বিষয়টি নিয়ে মুঠো ফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি আমার অবগত ছিল না, এখন জানতে পারলাম। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ ও ঋণ গ্রহীতা নারীদের মাঝে যেন এক আতঙ্ক বিরাজ করছে।