
মোঃ আলমগীর ইসলাম, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
প্রেমের ফাঁদে বিয়ের প্রলোভনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পরবর্তীতে ছবি প্রকাশের হুকমি দিয়ে ব্লাকমেইল, দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে। কিন্তু বিয়ে না করে নানা ভাবে কাল ক্ষেপন করায় ধর্ষিতা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করে। তবে প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও মামলার আসামী ধরা ছোয়ার বাহিরে থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বাদিনীর পরিবার।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চকহরিদাসপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত: মাহাবুর রহমানের কলেজ পড়–য়া দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মামনী আক্তার (১৯) এর সাথে পাশ্ববর্তী জোতজয়রামপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মোঃ তুহিন একই সাথে একই কলেজে পড়াশুনার সুবাদে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে শারীরিক মেলামেশার মাধ্যমে ধর্ষণ করে। এরই প্রেক্ষিতে ধর্ষতিতার অশ্লীল ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্লাকমেইল করে দিনের পর দিন ধর্ষণ অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৫ আগস্ট তুহিন রাতের আধারে প্রাচীর টপকিয়ে বাড়ীতে ঢুকে মামনীর ঘরে প্রবেশ করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আবারও ধর্ষণ করে। এতে ধর্ষিতা তার পরিবারের লোকজনের সাথে বিষয়টি আলাপ করে তুহিনের পরিবারকে অবগত করলেও নানা ভাবে কালক্ষেপন করিতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ২১ আগস্ট মামনী নিজেই তুহিনের পরিবারের বাড়ীতে গিয়ে বিষয়টি আবারও অবগত করলে তুহিনের পরিবারের লোকজন মামনীকে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। শেষে মামনী নিরুপায় হয়ে নিজেই বাড়ী হয়ে গত ২৫ আগস্ট একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং- ২৬। মামলা দায়ের পর ধর্ষণ তুহিন পালিয়ে যায় এবং তুহিনের পরিবারের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। মামলার আক্রোশ মিটাতে বাদীনির পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্ষক তুহিনের পিতা লুৎফর রহমান ২৭ আগস্ট আদালতে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করে। পরে বাদীনির মাতা মাছুমা বেগম বিষয়টি জানতে পেরে গত ২৮ আগস্ট তুহিনের পরিবারের ০৪ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করে। এর এক পর্যায় তুহিনের পিতা লুৎফর রহমান ১৫ সেপ্টেম্বর বাদীনির পরিবারের ০৬ জনের বিরুদ্ধে ১০৭, ১১৪, ১১৭ (৩) ধারায় আদালতে আবেদন দাখিল করে।
এভাবে একের পর এক ধর্ষকের পিতা লুৎফর রহমান মামলা তুলে নেওয়ার অব্যাহত, ভয়-ভীতি হুমকি এবং এ পর্যন্ত মামলা আসামী পলাতক থাকায় বাদীনি ও তার পরিবারের লোকজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে জানান মামলার বাদীনি ধর্ষিতা মামনী ও তার পরিবার।
তবে আসামী তুহিনের পিতা লুৎফর রহমান এবং চাচা সামছুল আলম বলেন আমাদের ও আমাদের পরিবারটিকে হয়রানি করতে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
থানায় দায়েরকৃত মামলার অগ্রগতি বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান জানান বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আসামী আটকের বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি। ঘটনাটি নিয়ে বাদীনি ও তার পরিবার ন্যায় বিচার প্রাপ্তি সাপেক্ষে ধর্ষকের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।