
গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার আফসারী খানমের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে ৩১ আগস্ট সোমবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসুচি পালিত হয়।
গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন ও সচেতন নাগরিক নামের একটি সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধন শেষে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক বরাবরে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলন ও সচেতন নাগরিক এর সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, আইনজীবী এসএম বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নদী ভাঙন কবলিত দরিদ্র পীড়িত গাইবান্ধা জেলার মা ও শিশুদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা আফসারী খানম। তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে মা ও শিশুদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। ভালো কাজের জন্য তিনি ১৪ দফায় রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন। এই মুহুর্তে তাকে এ জেলা থেকে বদলি করা হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হবে। বিশেষ করে প্রসূতি মায়েরা উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবে। তাই তাকে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে বহাল রাখা দরকার।
উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে জেমি আক্তার নামে এক প্রসূতির প্রসব বেদনা উঠলে তাকে নিয়ে স্বজনরা বোনারপাড়া থেকে গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র আসেন। সেখানে পৌঁছোনোর পর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সেলিনা বেগম কোন পরীক্ষা ছাড়াই অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীকে অন্যত্র যেতে বলেন। পরে ওই প্রসূতি মা গাইবান্ধা শহরের ডিবি রোডের পরিত্যক্ত ঘরে মেয়ে সন্তান প্রসব করেন। এরপর পুলিশের সহযোগিতায় অসুস্থ অবস্থায় মা ও নবজাতককে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ কর্মসূচি ও স্মারকলিপি প্রদান করে।
পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ তিন সদস্যের ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ডিজি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের ওই দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং সুপারিশের ভিত্তিতে মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. আফসারী খানমকে লালমনিরহাট ও মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সেকেন্দার আলীকে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়। গত ২৬ আগস্টের মধ্যে তাদেরকে উল্লেখিত কর্মস্থলে যোগদান করতেও বলা হয়। এর আগে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা সেলিনা আক্তারকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বদলি করা হয়।
এই নির্দেশের পর শুধু ডা. সেকেন্দার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক চলছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবরটি প্রচারিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।