
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর ‘হামলা’ দুঃখজনক ঘটনা। জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না’ বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজবাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটা জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। তাৎক্ষণিকভাবে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুশাসন প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে সরকার।’
বুধবার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত মই বেয়ে ইউএনওর সরকারি বাসায় ঢুকে এবং ভেন্টিলেটর ভেঙে ইউএনওর রুমে প্রবেশ করে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত শুরু করে। একসময় ইউএনও’র চিৎকার শুনে তার মুক্তিযোদ্ধা বাবা পাশের রুম থেকে ছুটে এসে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাকেও কুপিয়ে জখম করে। পরে পাশের কোয়ার্টারের বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রাতেই প্রথমে ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরদিন সকালে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার বাবা-মেয়েকে ঢাকায় আনা হয়। ভর্তি করা হয় রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে হাসপাতালে।
প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল বৃহস্পতিবার রাতে ইউএনও ওয়াহিদার মাথার জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হওয়ার পর ইউএনও ওয়াহিদাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত নন। তবে তার সেরে উঠার বিষয়ে আশা দেখছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ওই হাসপাতালেই ওয়াহিদার মুক্তিযোদ্ধা বাবাও চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউএনও ওয়াহিদার বড়ভাই ফরিদ হোসেন বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় একটি মামলা করেন।
এরইমধ্যে পুলিশ ও র্যাবের যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে শুক্রবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে হাকিমপুর উপজেলাস্থ হিলির কালিগঞ্জ এলাকা থেকে হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি আসাদুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার আসাদুল ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের সদস্য। সে উপজেলার ওসমানপুরের আমজাদ হোসেনের ছেলে। আসাদুলই ইউএনও’র মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে বলে জানিয়েছেন হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহিদ ফেরদৌস।
ইউএনও’র ওপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেনকেও গ্রেফতার করেছে র্যাব-পুলিশের যৌথ বাহিনীর একই টিম।