মহামারি নভেল করোনা ভাইরাসের তাণ্ডব কিছুতেই থামছে না। প্রতিদিনই দ্রুত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা। প্রতিদিনই বাড়ছে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায়ও নতুন করে আরও ৩ হাজার ৫৭ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। এইসময়ে মধ্যে সারা দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

ফলে এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ১০ হাজার ৫১০ জন হয়েছে এবং মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৭০৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৭০ শতাংশ ও এই সময়ের মধ্যে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৯ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৪ জন এবং নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত যারা কোভিড আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ২ হাজার ১৩৮ জন, ৭৮ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং নারী ৫৭১, ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) এর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিয়মিত বুলেটিনে সংযুক্ত হয়ে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

ডা. সুলতানা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১২ হাজার ১৪৯টি। পরীক্ষা হয়েছে পূর্বের নমুনাসহ ১২ হাজার ৮৯৮টি। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১০ লাখ ৫৪ হাজার ৫৫৯টি নমুনা।’

কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৯৭ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৪ দশমিক ৮২ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৭ জন ও ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছেন।’

এ পর্যন্ত বয়সভিত্তিক মৃত্যু শূণ্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, দশমিক ৬৬ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২৯ জন, ১ দশমিক ০৭ শতাংশ; ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৮১ জন, ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরে ১৮৪ জন, ৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরে ৩৮৭ জন, ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরে ৭৯৯ জন, ২৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব ১ হাজার ২১১ জন, ৪৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ডা. সুলতানা বলেন, যে ৪১ জন গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জন করে, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে ৫ জন করে এবং রংপুর বিভাগে ১ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ জন, বাড়িতে ১০ জন’

এ পর্যন্ত বিভাগভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যার মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৩২০, ৪৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ; চট্টগ্রামে ৬৮৮ জন, ২৫ দশমিক ৪০ শতাংশ; রাজশাহী ১৪৯ জন, ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ; খুলনা ১৭৮ জন, ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ; বরিশাল ১০০ জন, ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ; সিলেটে ১২৫ জন, ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ; রংপুরে ৯১ জন, ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং মংমনসিংহ বিভাগে ৫৮ জন, ২ দশমিক ১৪ শতাংশ।

তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৭১০ জন, ছাড় পেয়েছেন ৬৫১ জন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে গেছেন ৪৩ হাজার ৬৮০ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৬৭১ জন।

ডা. সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২২ জন। এ পর্যন্ত মোট ৪ লাখ ১৪ হাজার ৫০৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৩৭৫ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪২৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৯ হাজার ৭৯ জন।