
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার দেয়ার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১৯৭১ সালে তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশের মানুষকে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন।
আজ বুধবার (২২ জুলাই) স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠক বিএনপি নেতা মরহুম শাহজাহান সিরাজের স্মরণে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশন (বিএনআরসি) এ সভার আয়োজন করে।
রাজনৈতিক কারণে ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যখন রাজনৈতিক নেতারা স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না তখন এ দেশকে স্বাধীন করার জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজ শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ঘোষক সেই মহান নেতাকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিকভাবে একটি দলকে স্বাধীনতার ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা অন্যান্য জাতীয় বীরদের ইতিহাস আড়াল করা হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর যারা স্বাধীন বাংলার জন্য লড়াই করেছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন তারা বাংলাদেশের মানুষের অধিকার যেন ফিরে পায় সে জন্যই ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছেন। তারা এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই এদেশকে স্বাধীন করেছেন। তারা আজকের এ বাংলাদেশকে দেখতে চাননি।
তিনি বলেন, তারা দেখতে চেয়েছেন এমন একটি দেশ, যে দেশে মানুষ তাদের সকল অধিকার ফিরে পাবে এবং সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা স্বাধীনতার দল হিসেবে নিজেদের দাবি করলেও অত্যন্ত সচেতনভাবে তারা এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
আবারও জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে আমাদের পূর্বপুরুষদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই তবে ১৯৭১ সালের মতো একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। সেই ঐক্যের মাধ্যমেই এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ও অন্যান্য অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।
শাহজাহান সিরাজকে স্বরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি শাহাজাহান সিরাজকে শুধু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই না। দেশের মানুষও তা চায় না। শাহাজাহান সিরাজকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইশতেহার পাঠকারী, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন নায়ক হিসেবেই তারা দেখতে চান এবং সেভাবেই তারা দেখেছেন। এদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার জন্য লড়াই করেছিলেন শাহাজাহান সিরাজ। শাহাজাহান সিরাজের সারাটা জীবন এই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপনের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন।