করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদলের অংশ হিসেবে পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার্দ ফিলিপ্পে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলিসি প্রাসাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে মহামারির সময়ে ক্রমেই জনপ্রিয় হতে থাকা প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দাখিল করেছেন।
তবে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত ফিলিপ্পে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রথা অনুযায়ী ফ্রান্সে মন্ত্রিসভা রদবদলের আগে প্রধানমন্ত্রী সবার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে পুনরায় আবার তাদের ওই পদে নিয়োগ দেওয়ারও নজির রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোর সরকারে তিন বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন এদুয়ার্দ ফিলিপ্পে।
শুক্রবার এলিসি প্রাসাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এদুয়ার্দ ফিলিপ্পে আজ সরকার প্রধান হিসেবে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন আর প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট তা গ্রহণ করেছেন। নতুন সরকার নিয়োগের আগ পর্যন্ত তিনি সরকারের অন্য সদস্যদের নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলা অব্যাহত রাখবেন।’
কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার্দ ফিলিপ্পে। অপর দিকে প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রো আরও বৃহত্তর চিত্র হাজির করতেন। সংবাদ সম্মেলনগুলোতে লকডাউনের নিয়মকানুনসহ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অজনপ্রিয় নিয়মকানুনগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়ার সময় ফিলিপ্পে শান্ত, এবং গুরুগম্ভীর থেকে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাইতেন।
সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপে দেখা গেছে প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা খানিকটা কমলেও বেড়েছে প্রধানমন্ত্রীর। ফ্রান্সের প্রায় অর্ধেক ভোটার ফিলিপ্পে’কে সমর্থন করলেও ওই জরিপে দেখা গেছে প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন ৩৩ থেকে ৩৯ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
২০১৭ সালের নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ৪৯ বছর বয়সী এদুয়ার্দ ফিলিপ্পেকে নিয়োগ করেন। ওই সময়ে তিনি ডানপন্থী লেস রিপাবলিকান (এলআর) দলের সদস্য ছিলেন। এলআর ছেড়ে আসলেও তিনি কখনোই ক্ষমতাসীন মধ্যপন্থী দল লা রিপাবলিক এন মার্চেতে যোগ দেননি। পদত্যাগের মাত্র কয়েক দিন আগেই এদুয়ার্দ ফিলিপ্পে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর নগরী লা হাবরে’র মেয়র পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মে মাসে ফ্রান্সে দুই মাসের কঠোর লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকেই গুঞ্জন শুরু হয় প্রেসিডেন্ট যেকোনও মুহূর্তে মন্ত্রিসভায় রদবদল আনতে পারেন। নিজের ক্ষমতার বাকি মেয়াদের কার্যক্রমে গতি আনার অংশ হিসেবে তিনি এই রদবদল আনতে পারেন বলে অনেকেই ধারণা করতে থাকেন। কেউ কেউ ধারণা করেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিলিপ্পেকে পাল্টানোর পথেও হাঁটতে পারেন প্রেসিডেন্ট।