মহামারি নভেল করোনা ভাইরাস বাংলাদেশের গত ৫০ বছরের অর্জিত সকল উন্নয়নকে বিপরীত দিকে ঠেলে দেয়ার হুমকিতে ফেলেছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। একইসঙ্গে বাংলাদেশে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকা দরিদ্রদের সহায়তায় ৩২ কোটি ডলারের আবেদন করেছে সংস্থাটি।
এ বিষয়ে ডব্লিউএফপি মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোতে খাদ্য ও নগদ অর্থ বিতরণের জন্য ৩২০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি আহ্বান জানিয়েছে।’
এদিকে জাতিসংঘ মনে করছে, এ তহবিলের প্রায় ২০ কোটি কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজন আর বাকি ১২ কোটি ডলার মূলত রোহিঙ্গাদের পরবর্তী ৬ মাসের সহায়তার জন্য দরকার।
গত প্রায় দুই মাস ধরে সারা দেশে লকডাউন ও সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি অব্যাহত থাকায় দিনমুজুর শ্রেণির সাধারণ মানুষ ভয়ানক বিপদের মুখে পড়েছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরাও মাসের পর মাস ঘরে বসে থেকে এখন হাতের পুঁজি খুইয়েছেন। গোটা দেশের সর্বস্তরের মানুষ আতঙ্কে দিশেহারা।
ডব্লিউএফপির মুখপাত্র বলেন, ‘লকডাউন ও সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে বাংলাদেশে কয়েক মিলিয়ন মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে দিন আনে দিন খায় শ্রেণির মানুষেরা মৌলিক চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে।’
মূলত ডব্লিউএফপির অধীনে এ অর্থ গ্রামীণ অঞ্চল ও শহুরে বস্তিবাসীদের পাশাপাশি শ্রমজীবী এবং দিনমুজুর শ্রেণির মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ইতোমধ্যে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি চাল, নগদ অর্থ বিতরণ ও পুষ্টি কর্মসূচি জাতীয় কার্যক্রম চলমান রেখেছে সংস্থাটি।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর সংবাদ আসে ১৮ মার্চ। এরপর মার্চ মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু নাগালের মধ্যে থাকলেও এপ্রিলের শুরু থেকেই বিশেষত এপ্রিলের মাঝামাঝির পর থেকে ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৯৯৫ জন হয়েছেন। মারা গেছেন ৩১৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ১১৭ জন।