
করোনা ভাইরাস সংক্রামণ মোকাবিলায় সরকারের অবহেলা-অজ্ঞতায় কারণে চরম অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকেলে হাতধোঁয়ার বেসিন উদ্বোধনী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে স্কাইপেতে যুক্ত হয়ে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরু বলেন, ‘আজকে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হলে সেখানে কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থা নাই। যে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার কথা বলা হচ্ছে সে হাসপাতালগুলোতে আসলে কোনও চিকিৎসা নাই। আজকে কিছুক্ষণ আগে আমি দেখতে পেলাম কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে যারা নার্স আছেন তাদের খাবারের কোনও ব্যবস্থা নাই।’
‘এই যে চরম একটা অব্যবস্থাপনা, এই অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে তার একটা মাত্র কারণ হচ্ছে- সরকারের চরম অবহেলা এবং অজ্ঞতা অথবা সেই মানসিকতাই তাদের তৈরি হয়নি কিভাবে এই জিনিসটাকে মোকাবিলা করতে হয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা দেখছি যে, জেলাগুলোতে যেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, তাদের চিকিতসার ব্যবস্থা নেই। একটা জটিল ভয়াবহ অমানবিক একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা এই অবস্থা থেকে বেরুনোর জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেছি।’
‘আসুন আজকে আমরা যে যেখানে আছি, যে যতটুকু পারি, যেভাবে পারি আমরা যেন মানুষের জন্যে এই চরম দুর্দিনে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।’
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠিসহ বিভিন্ন শ্রেণির জন্য ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্রস্তাবসমূহ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সব কিছু বন্ধ হয়ে যাওয়াতে সাধারণ দিন আনে দিন খাওয়া মানুষ অসহায়ের মধ্যে আছে, অনেকে না খেয়ে আছে। প্রান্তিক মানুষ অনেকে আছেন তারা খাওয়া পাচ্ছেন না। সরকার এ বিষয়ে কোনো বাস্তব কার্য্করী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’
‘তারা একটা প্যাকেজ দিয়েছে যে, প্যাকেজে পুরোপুরিভাবে শুধুমাত্র যারা বিত্তশালী, যারা বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে জড়িত, বিভিন্ন গার্মেন্টসের সাথে জড়িত তাদের জন্যে এই প্যাকেজগুলো করা হয়েছে। তাও শুধুমাত্র ঋণের জন্য। আমরা দেখেছি এই প্যাকেজটা একটা ব্যাংক ঋণের প্যাকেজ। সাধারণ মানুষের জন্য কোনো বরাদ্ধ আমরা দেখতে পারছি না। আমরা পত্রিকাগুলোতে দেখছি ১০ টাকা কেজি চাল দেয়া হচ্ছিল গরীব লোকের জন্যে তা চলে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাদের ঘরে ….। আমরা দেখছি যে, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিগুলোতে শ্রমিকরা বেতন চাচ্ছে তাদের বেতন না দিয়ে পেটানো হচ্ছে। আজকে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং দুর্দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থতাবস্থায় এই ভাইরাস থেকে পরিত্রাণে দেশবাসীর জন্য আল্লাহ‘তালার কাছে দোয়া করার কথাও জানান বিএনপি মহাসচিব।
তেজগাঁওয়ে দিনকাল পত্রিকার কাছে জিয়াউর রহমান ফা্উন্ডেশনের উদ্যোগে প্রকৌশলীরা হাত ধোয়ার জন্য বেসিন স্থাপন করার এই কর্মসূচি হয়। ফাউন্ডেশনে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় এই কর্মসূচির আওতায় তিন‘শ বেসিন স্থাপন করে জনসাধারণের জন্য হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করেছে।
হাত ধোঁয়ার জন্য বেসিন স্থাপন করার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক মো. মোর্শেদ হাসান খান, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, আসাদুজ্জামান চুন্নু, আশরাফ রেজা ফরিদী, উমাশা উমায়ুন মনি চৌধুরী, কামরুল হাসান সাইফুল, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।