দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সর্বসাধারণকে ইবাদত বা উপাসনা নিজ নিজ বাড়িতে পালনের নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে জুমার নামাজের জামাতে ১০ জন ও প্রতি ওয়াক্ত নামাজে মসজিদে পাঁচজন নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এখন পরিস্থিতি উন্নতি হয়নি, বরং বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আসন্ন রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ঘরে বসেই তারাবির নামাজ আদায় করতে হতে পারে। যদিও রমজানে তারাবি নামাজ নিয়ে নতুন কোনও নির্দেশনা আসেনি।
তবে মন্ত্রণালয়েল সুত্র জানিয়ে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। তারপরই তারাবির নামাজ পড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার। সেই সিদ্ধান্ত আসবে রমজানের কয়েকদিন আগে। দেশের দায়িত্বশীল আলেমরা বলছেন, চাঁদ দেখা সাপেক্ষা রমজান মাস শুরু হবে চলতি এপ্রিলের ২৫ তারিখে। ওই সময়ের মধ্যে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নিজ নিজ ঘরেই তারাবি নামাজ আদায় করতে হবে।
এবিষয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দোয়া করি আল্লাহপাক রমজানের আগেই এই করোনা ভাইরাসের বিপদ থেকে সারা মানবজাতিকে যেন রক্ষা করেন, পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক করে দেন। কারণ, সারা বছরে মাত্র একটি মাস রমজান। তবে কথা হচ্ছে, রমজানে রোজার মসজিদে জমায়েত হওয়া বা মসজিদে আসার কোনও সম্পর্ক নেই। রোজা, ইফতার, সেহেরি—সব তো ঘরেই হবে। তারাবির নামাজ মৌলিকভাবে মসজিদের চেয়ে ঘরে পড়লে সওয়াব বেশি। আমরা কোরান শরীফ খতমের জন্য মসজিদে জামাতে পড়ি, সবাই তো আর হাফিজ না। তাই, রমজানের ইবাদত হিসেবে কোনও অসুবিধা হবে না। কেবল এতেকাফের সঙ্গে মসজিদের সম্পর্ক, এছাড়া কোনও কিছুর সঙ্গে মসজিদের সম্পর্ক নাই।’
ধর্মীয় দিক থেকে বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে দেশের খ্যাতনামা এই ইসলামী বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এতেকাফ হচ্ছে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ, ফরজ না। এটা যদি মুয়াজ্জিন সাহেবও করেন তাহলেও আদায় হয়ে যাবে। আর তারাবির নামাজ মসজিদে পড়তে হবে এমন কথা নেই। আল্লাহওয়ালারা এশার নামাজ পড়ে বাসায় গিয়ে তারাবি পড়েছেন।’
বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজধানীর মুহাম্মদপুর জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মুফতি মাহফুযূল হক বলেন, ‘আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, তিনি যেন রমজানের আগেই যেন পরিবেশ ঠিক করে দেন। আমাদের আকুতি হচ্ছে, রমজানে তৃপ্তির সঙ্গে মুসলমানরা যেন তারাবি নামাজ আদায় করতে পারেন। কিন্তু যদি পরিস্থিতি যদি উন্নতি না হয়, এ অবস্থাই থাকে বা আরও অবনতি ঘটে, তাহলে সেক্ষেত্রে পরিস্থিতির আলোকে সবার জন্য যা কল্যাণকর সেটাই করতে হবে।’