বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েট বলছে, তারা সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা কর্মসূচীতে অংশ নেবে না। পুরোনো পদ্ধতি তথা আগের মতোই নিজেরাই আলাদা ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে তারা।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা পরিষদের সদস্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন বুধবার শিক্ষা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেছেন, ৪৮ বছর ধরে যে পদ্ধতিতে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা হয়ে আসছে তাতে আমরা সেরা শিক্ষার্থীদেরই পাচ্ছি, এটা একেবারে প্রমাণিত। তাই আমরা আগের মতোই পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এমাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশের সবকটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সমন্বিতভাবে হবে।
এর আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আলাদা পরীক্ষা দিতে হতো। আলাদা ফর্ম কিনে জমা দিতে হতো। কমিশন এই শিক্ষাবছর থেকেই এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে। দেশে ১২ টির মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
চলমান ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তির জন্য সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিশ্ববিদ্যালয় হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এর আগে জানিয়েছে যে এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে চাইলে একজন শিক্ষার্থীকে চার রকমের প্রস্তুতি নিতে হয়।
অনেক সময় একই তারিখে পড়ে যায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। এসব জটিলতা দুর করতে সমন্বিত পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে।
কিন্তু এখন বুয়েট সমন্বিত পরীক্ষা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলো। এমন ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অবশ্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে যে দ্বিমত রয়েছে তা আগেই জানা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২৪ তারিখ তাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছে।
তাহলে ইউজিসির সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাচ্ছে না বুয়েট? এমন প্রশ্নে মিজানুর রহমান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েগুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সাধুবাদ জানায় বুয়েট কর্তৃপক্ষ। তবে এতে যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বুয়েট।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি দেশের সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সমন্বিতভাবে ভাবে ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয় ইউজিসি। সে সময় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ দেশের বড় ৫ বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে অনাগ্রহ দেখিয়ে আসছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে ইউজিসিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটের উপাচার্যদের নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানান উপাচার্যগণ।
আজ বুয়েট তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল।
প্রসঙ্গত, বুয়েট প্রথমে শিক্ষার্থীদের কাছে আবেদন আহ্বান করে। এরপর সেগুলো প্রাথমিক বাছাই করে নির্ধারিতসংখ্যক পরীক্ষার্থী নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেয়। এর ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করে।