
আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল বা জামিনে মুক্তি নিয়ে বারবার প্রশ্নের জবাব দেব সেই সময় আমার নেই, আমাদের অনেক কাজ রয়েছে, দেশের কাজ, দলের কাজ। একজন খালেদা জিয়াকে নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। আর এটা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয়, এটা দুর্নীতির মামলা। দুর্নীতির মামলা যেটা হবার সেটাই হবে।
আজ বুধবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আ.লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা বিভাগের সকল সংগঠনের জেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্যদের বিশেষ যৌথ সভার শুরুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্ণেল অব. ফারুক খান, শাজাহান খান, আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর আ.লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিভাগীয় বিভিন্ন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, এই প্রশ্নটি করবেন না। তিনি আদালতে আছেন, আদালতই ঠিক করবে। এটা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয়, এটা দুর্নীতির মামলা। দুর্নীতির মামলা যেটা হবার সেটাই হবে। আদালত যেটা সিদ্ধান্ত নেয়ার নেবে, এটা আ.লীগের হাতে নেই, শেখ হাসিনার হাতে নেই। আমাদের কারো কাছে নেই, আমাদের এখতিয়ারে নেই। কাজেই এই প্রশ্নটা করে বারবার বিব্রত করবেন না। এই প্রশ্নের জবাব দেব না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দল প্রচার করছে নির্বাচনে (সিটি নির্বাচন) কারচুপি হয়েছে। কিন্তু ইভিএমে কারচুপি বা জালিয়াতির কোনো সুযোগ ছিল না। যদি এরকম সুযোগ থাকতো, তাহলে নির্বাচনে পার্সেন্ট বেশি বা অস্থিতিশীলতা হতো। যদি কোন প্রকার কারচুপি ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হতো তাহলে এই নির্বাচনের অবস্থা ভিন্নতর হতে পারতো।
তিনি বলেন, সিটি নির্বাচনে সমস্যাটা ছিল ভোটার উপস্থিতি কমের জন্য, পরিবহন সংকট, তিন দিনের মতো ছুটি, অনেকের ছেলেমেয়েরা দেশের বাড়িতে এসএসসি পরীক্ষা থাকায় সেই সময় অভিভাবকরা তাদের ছেলে-মেয়েদের পরীক্ষার আগের সময়টা গ্রামের বাড়িতে কাটিয়েছেন। সব কিছুর কারণ আছে। তারপরও নির্বাচন নিয়ে সারা দুনিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি করার চেষ্টা হচ্ছিল। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে এবং নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক মহলে অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তারা পারেনি। সামনে আমাদের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। ঢাকা মহানগরেও একটা নিবাচন আছে। ঢাকা-১০ আসন নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। তিনি বলেন, এ নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা অনেক। এ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। সাংগঠনিক দুর্বলতাও ভোটারদের উপস্থিতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই গ্যাপ আমাদেরকে পূরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে দল ক্ষমতায় আছে বলেই আমরা উপলব্ধি করতে পারছি না। সাংগঠনিক দুর্বলতা আমাদের ক্ষতির কারণ হচ্ছে কিনা। আমাদের শক্তিও ক্ষয় হচ্ছে। সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হলে সরকার কখনো শক্তিশালী হবে না। শক্তিশালী সরকার তখনই হবে যখন আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হবে।
মুজিব বর্ষ উদযাপনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিব বর্ষ উদযাপনের নামে কেউ বাড়াবাড়ি করবেন না। মুজিব বর্ষ উদযাপনের নামে অতি উৎসাহী হয়ে এমন কোনো কাজ করবেন না যেটা জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। বঙ্গবন্ধুর ইমেজবিরোধী কোন কাজ করা যাবে না। তিনি প্রতিষ্ঠিত, নতুন করে তাকে প্রতিষ্ঠা করার কিছু নেই। তার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করতে গিয়ে আমরা এমন কোনো বাড়াবাড়ি যেন না করি। চাঁদাবাজির দোকান যেন না খুলি। চাঁদাবাজির দোকান আপনাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের অনেক কর্মসূচি রয়েছে আমাদের অনেক কাজ রয়েছে। এখন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বারবার আপনাদের প্রশ্নের জবাব দেবো সেই সময় আমাদের নেই। এ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এই প্রশ্ন দয়া করে আর করবেন না।কাদের বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে সে অবস্থান এখনো আসেনি। এটা যদি কনটিনিউ করে (চলমান থাকে), তাহলে আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আড়াই মাসের বেশি দীর্ঘায়িত হলে আমাদের চলমান কাজের ক্ষতি হবার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী দুই মাসে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।