
রাজধানীর কুর্মিটোলায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার মজনু পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছে।
তার সিরিয়াল ধর্ষক হওয়ার পেছনের গল্প অকপটে বলে যাচ্ছেন মজনু। গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে মজনু জানায়, কয়েক বছর ধরেই নানাভাবে পথশিশু, ভবঘুরে নারীদের ফুসলিয়ে আবার কাউকে ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে আসছিল সে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে এই প্রথম নিপীড়ন করল সে।
মাস দেড়েক আগে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি এলাকায় আরেক ভবঘুরে নারী জেসমিনের সঙ্গে দেখা হয় মজনুর। সেও বিভিন্ন রেলস্টেশনে ঘুরে বেড়াত। একপর্যায়ে তার সঙ্গে সখ্য তৈরি হয় তার। এরপর প্রেমের সম্পর্ক। তাকে ঢাকায় নিয়ে আসে মজনু। দু’জন মাস খানেকের বেশি রাজধানীর শেওড়া, বনানী ও বিমানবন্দর রেলস্টেশনে কাটিয়ে দেয়। তবে কয়েক দিন আগে জেসমিন এক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। সেই শোকে কাতর হয়ে পড়েন মজনু।
র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর বুধবার মামলার তদন্ত সংস্থা ডিবির কাছে তুলে দেয়া হয় মজনুকে। এরপর বিশদ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাকে।
মজনু ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়ে ডিবিকে জানায়, রোববার কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে টার্গেট করার সময় তার পরিচয় সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তার। সে মনে করেছিল, বিকৃত স্বভাবে প্রায় নিয়মিত যেভাবে ‘শিকার’ ধরে থাকে রোববারের ঘটনাও তাই ছিল। এমনকি টার্গেট করা ওই তরুণীকে নিয়ে রেললাইনে ‘লালন-পালন’ করে সঙ্গে রাখবে এমন কথাও ভাবতে থাকে সে। রাত গভীর হলে ওই তরুণীকে রাস্তার ওপারে রেললাইনে নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান ছিল তার। এজন্য সে দীর্ঘ সময় তার পাশে বসে থাকে। তবে ওই ছাত্রী যখন বারবার বাধা দিচ্ছিল, তখন ঘাবড়ে যায় মজনু। একপর্যায়ে তার ভালো পোশাক-পরিচ্ছদ দেখে সে উপলব্ধি করে, ভুল টার্গেটে হাত দিয়েছে সে। পরিচয় নিশ্চিত হতে বারবার তাই মেয়েটির নাম-পরিচয় ও কোথায় পড়াশোনা করছে তা জানতে চেয়েছিল মজনু। সে ভুল করে ‘বড় কোনো মানুষ’কে টার্গেট করেছে, এটা বুঝতে পারে অবশেষে।
এদিকে ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় সারাক্ষণ মজনুর শরীর কাঁপছিল। তার মাথা ছিল নিচু।