
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের হামলা আহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরসহ আহতদের দেখতে হাসপাতালে গেছেন আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
আজ রোববার সন্ধ্যায় তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে যান নুরকে দেখতে।
এর আগে দুপুরে ডাকসু ভবনের নিজ কক্ষে হামলার শিকার হন ভিপি নুর। হামলায় নুর ও তার সংগঠনের ২২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নুরুল হকসহ অন্তত ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় দুইজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়েছে। এই হামলার জন্য নুর ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চকে দায়ী করেছেন।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অভিযোগ করে বলেন, অতর্কিতভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এসময় অনেকেই আহত হয়েছেন। এমনকি কয়েকজনকে ডাকসু ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, দুপুর ১২টায় রাজু ভাষ্কর্যে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ তাদের পূর্বনির্ধারিত একটি কর্মসূচি শেষ করে ডাকসু ভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সেখানে ভিপি নুরসহ তার অনুসারীদের সঙ্গে মঞ্চের নেতাকর্মীদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরে মঞ্চের কিছু নেতাকর্মী নুরদের লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে। মঞ্চের কিছু নেতাকর্মী ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় উঠতে থাকলে নুরের অনুসারীরা তাদের প্রতিহত করে ডাকসু ভবনের মুল ফটক বন্ধ করে দেয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেন ডাকসু ভবনের মূল ফটক খুলে ভেতরে ঢোকেন। তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীও ঢুকে পড়েন। সনজিত-সাদ্দাম ভিপি নুরের কক্ষে গিয়ে তাকে বহিরাগতদের বের করে দিতে বলেন। কিন্তু নূর আপত্তি জানালে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এসময় ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীরা ভিপি নুরের কক্ষে থাকা সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের করে বের করে দেন।
ওই কক্ষ থেকে বের হতে বাধ্য হওয়া পরিষদের নেতা-কর্মীরা নিচে নামার পরপরই ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদের লাঠিপেটার শিকার হন।
এরই মধ্যে সনজিত ও সাদ্দাম ডাকসু ভবন থেকে বেরিয়ে পাশের মধুর ক্যান্টিনে চলে যান। এরপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ভিপি নুরের কক্ষে ঢুকে বাতি নিভিয়ে সেখানে থাকা সবাইকে এলোপাতাড়ি পেটান বলে আহতরা জানান।
এতে নূর ছাড়াও আহত হন পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ন আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, রাশেদ খানসহ ১৫ জন। এদিকে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণফোরাম সভপতি ড. কামাল হোসেন। তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।