
বাংলার মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।
আজ শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জেএসডির নবম কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি সবচেয়ে বেশি আশাবাদী সেই সত্তরের দুর্দিনে যখন সারা পৃথিবীর মানুষ বলতেছিল এমনকি একাত্তরেও বলতেছিল স্বাধীনতা অসম্ভব। কি করে হবে এটা হতে পারে না। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলাম। এটাই প্রমাণ করে বাংলার মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। এ কারণেই আমি বলি আমাদের নিরাশ হওয়ার কোন কারণ নেই।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ অন্ধ না, দেশের মানুষের বিচার করার ক্ষমতা আছে। আমি সবার কাছে বলছি যে কয়েকটি অনুষ্ঠানকে নির্বাচন বলে চালানো হয়েছিলো সেটাকে নির্বাচন হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারি না। আমি বলবো যারা সরকারে আছেন ও তাদের সমর্থক তারা এরকম দাবি করে মনে করবেন না মানুষ অন্ধ, দেশের মানুষের মধ্যে সে বিচার করার ক্ষমতা নেই।
ড. কামাল বলেন, পাকিস্তান আমলে যে ধরনের স্বৈরশাসক ছিল এবং তাদের পেছনে যে বৃহৎ ক্ষমতা ছিল তাতে কেউ ভাবতে পারেনি যে আমরা স্বাধীন হতে পারব। আমাকে তখন বলা হয়েছিল যে দেখেন আপনারা বাঙালিরা কাল্পনিক চিন্তা করেন। কি করে আপনারা স্বাধীনতার চিন্তা করেন? যে এত বড় শক্তিশালী আপনাদের কেন্দ্রীয় সরকার যাদের এত বড় আর্মি, এত বড় নেভি, এত বড় এয়ারফোর্স এতে কি করে আপনার ভাবতে পারেন যে স্বাধীনতা লাভ করবেন? সেই স্বাধীনতা তো আমরা শুধু লাভ করেনি আজকে পঞ্চাশ বছর হতে যাচ্ছে আমরা সেটা ধরে রেখেছি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যে উন্নয়ন উন্নয়ন বলা হচ্ছে কিন্তু কত ঋণের বোঝা বাড়ছে? কত টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে এগুলোর তথ্য পত্রিকায় পাবেন। তারা উন্নয়নের দাবি করছে সেটা করুক কিন্তু এসব ব্যাপারে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের জবাবদিহিতা করার অধিকার রয়েছে।
তিনি বলেন, উন্নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন! এই উন্নয়ন যারা আমরা বয়স্ক লোক আইয়ুব খানের আমল দেখেছি তারা উন্নয়নের বক্তব্য শুনতে শুনতে আইয়ুব খানের পতন ও দেখেছি। এই উন্নয়নের কথা বলে বলে যে পতন হয় এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ ছিল ইয়াহিয়া খান ও আইয়ুব খান এর সময়। যারা সবসময় এটা জোর দাবি করেছে যে উন্নয়ন উন্নয়ন উন্নয়ন! কিন্তু তথ্য গুলো দেখান যাতে তথ্য দেখে বোঝার ক্ষমতা আছে। এইযে এতদিনের বোঝা বাড়ছে কেন? ঋণ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে কেনো? কারণ ওদের কে খুশি করে যদি আরো কিছুদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়। কিন্তু এই ঋণ এর দ্বারা আমাদের রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে। ট্যাক্স থেকে টাকা তুলে সরকার দেশটা চালাতে পারছে না।জেএসডির কাউন্সিলে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি সবাই একটা পরিবর্তন চাচ্ছে। পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে। আমি বিশ্বাস করি আপনারা এখান থেকে গিয়ে সবাই পরিবর্তনের সৈনিক হিসেবে কাজ শুরু করবেন।