
দেশের মানুষ তো পরিবহন সেক্টরের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কিছু হলে শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হয়। একজন মানুষ (ইলিয়াস কাঞ্চন) নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাজীবন আন্দোলন করছে, অথচ তাকে হেয় করল শ্রমিকরা। কিন্তু উনি তো নিজের জন্য আন্দোলন করছেন না বলে মন্তব্য করেছেন আদালত।
আজ বুধবার গ্রিন লাইন বাসের চাপায় পা হারানো রাসেলের ক্ষতিপূরণের রুলের শুনানিতে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালত বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছিলো মানুষ, গরু-ছাগল চিনলেই হয়। দায়িত্বশীল পদে থেকেও তো এরকম কথা বলা হয়েছে। দুর্ঘটনায় কি শুধু সাধারণ মানুষ মারা যায় চালকও তো মারা যায়। সেটাও তো পরিবহন মালিকদের লক্ষ্য রাখা উচিত। একজন চালক মারা গেলে তার পরিবারকে কি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়?
রাসেলের ক্ষতিপূরণ বিষয়ে আইনজীবীর উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট বলেন, ও তো গরীব ছেলে। মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে তো ওকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। আপনাদের পরিবহন মালিকদের কোটি কোটি টাকা। ইচ্ছে করলে এ ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য তো অনেক কিছুই করার সুযোগ রয়েছে।
আদালত বলেন আপনাদের (গ্রিন লাইন) আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা কিস্তি করে টাকা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলাম। এখন সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেছেন। রাসেল তো এখন টাকা পাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসা না হওয়ায় তার শারীরিক অবস্থা অবনতির দিকে।
এ সময় গ্রিন লাইন পরিবহনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, আমি আমার ক্লাইয়েন্টের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। আমার ক্লাইয়েন্টের আপত্তি ছিল এভাবে ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ হলে সবাই আদালতে চলে আসবে। আদালত বলেন, মালিকরা দক্ষ চালক নিয়োগ দিচ্ছে না বলেই তো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ কারণেই তো ক্ষতিগ্রস্তরা আদালতে আসছে। যদি চালক নিয়োগে পরিবহন মালিকরা সতর্ক হত তাহলে দুর্ঘটনা কমে যেত বলেও মন্তব্য করেন আদালত।
রিটকারী আইনজীবী শামসুল হক রেজা বলেন, দুটো কিস্তি তারা এখনো রাসেলকে দেয়নি। পরে গ্রীন লাইন পরিবহনের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে অবকাশের পর এই মামলার রুল শুনানির জন্য দিন ধার্য করে আদালত। এ সময় আদালতে রিটকারী আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি ও পা হারানো রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
পরে গ্রিন লাইন পরিবহনের আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে অবকাশের পর এই মামলার রুল শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।