
রাজধানীর বনানীতে চীনের নাগরিক জিয়ানহুই গাওকে (৪৭) হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরের একটি টিম। এ সময় চুরি হয়ে যাওয়া টাকা, মোবাইল ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) মশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তারদের নাম আব্দুর রউফ (২৬) ও এনামুল হক (২৭)। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয় বা হত্যাকাণ্ডে তাদের ভূমিকা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য দেননি তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, চীনের হুজিয়ান শহরের বাসিন্দা গাও জিয়ানহুই কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে আছেন। দেড় বছর ধরে বনানীর ওই বাড়িতে ভাড়া থাকেন। এক ছেলে ও এক মেয়েসহ তাঁর স্ত্রী প্রায়ই বাংলাদেশে এসে তাঁর সঙ্গে থাকতেন। গাও জিয়ানহুই ১৭-১৮ বার চীনে আসা-যাওয়া করেছেন। সর্বশেষ গত ৭ ডিসেম্বর তিনি চীন থেকে আসেন। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের ঢাকায় আসার কথা।
ডিসি সুদীপ আরো জানান, গাও জিয়ানহুই আগে উত্তরায় থেকে গার্মেন্টের লেইস সরবরাহের ব্যবসা করতেন। পরে তিনি ব্যবসা বাড়িয়েছেন। বর্তমানে তাঁর পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন প্রকল্পে পাথর সরবরাহের ব্যবসা রয়েছে। এই চীনা নাগরিক ইংরেজি ও বাংলা বলতে পারেন না। তাঁর একজন দোভাষী ছিল। বাসায় কিছু চীনা নাগরিক ও বাংলাদেশিকে মাঝেমধ্যে নিয়ে এলেও তারা কেউ বাসায় থাকতেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাও জিয়ানহুইয়ের ফ্ল্যাটে জিনিসপত্র তছনছ করা হয়নি। তাঁর অফিস কক্ষে জুতার ওপর কয়েক ফোঁটা রক্ত ও কয়েকজনের ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাবসায়িক বা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে গত মঙ্গলবার রাতে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর লিফটে করে লাশ নামিয়ে বাড়ির পেছনে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করা হয়। বাড়িটির সিসি ক্যামেরা দেড় মাস ধরে বিকল থাকায় কোনো আলামত মেলেনি। নিহতের গাড়িচালক সুলতান, বাড়ির ম্যানেজার, গৃহকর্মী, নিরাপত্তাকর্মীসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।