
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ রাজধানীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, আজ বেলা ২টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অথবা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল (শনিবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তার পানি নিয়ে একটা সুরাহা করে আসবেন। তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য দূরে থাক, কোনো হিস্যাই পাওয়া যায়নি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফেনী নদীর পানি বিনিময় ছাড়াই উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঊষর মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। সেচ মৌসুম চলছে অথচ এখনই নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ অন্যান্য এলাকায় সেচের পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেই বিষয়ে কোনো আলোচনাই করেননি। প্রায় প্রতিদিন সীমান্ত হত্যা চলছে। এ নিয়েও শেখ হাসিনা মুখ বন্ধ রেখেছেন। সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা যেন নৃশংস দস্যুতার নামান্তর। দেশ মরুভূমি হয়ে যাক, সীমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশী মানুষ মরুক তাতে শেখ হাসিনার কিছু আসে-যায় না। তিনি নিজ দেশের জনগণের অন্তরুদ্ধ ক্ষোভ টের পান না। তিনি শুধু দিতেই জানেন, নিতে জানেন না। তার ক্ষমতার সোনার হরিণটি নিশ্চিত হলেই তিনি সন্তুষ্ট। আওয়ামী লীগের ভাবাদর্শ হচ্ছে নিজ দেশে অত্যাচারী আর অন্য দেশের প্রতি নতজানু থাকা।
ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন- ‘সরকার দেশের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে, কিন্তু বিএনপির মুখ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই।’ এই বক্তব্যের মাধ্যমে ওবায়দুল কাদের সাহেব নিজের অজান্তেই স্বীকার করে নিলেন- আইন আদালত, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রেখেছেন। মানুষের ভোটাধিকারও নিয়ন্ত্রণ করে রেখে ভোটের আগের রাতের ভোট প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিতে সক্ষম হয়েছেন, কারারুদ্ধ করে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। এমনকি গোরস্থানকে নিয়ন্ত্রণ করে লাশের বিরুদ্ধে মামলা দিতে সক্ষম হয়েছেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা দিনের পর দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। অথচ দেশনেত্রীর জামিন কিংবা সুচিকিৎসার ব্যাপারে প্রতিহিংসাপরায়ণ সরকারের নিষ্ঠুরতা যেন থামছেই না। সরকারের আচরণে জনগণের মনে এখন একটি প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে যে, দেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের পথে সরকারপ্রধান দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছেন কি না। দেশনেত্রীর এই বিপুল জনপ্রিয়তা শেখ হাসিনা সহ্য করতে পারেন না বলেই মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মামলায় তাঁকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছেন। কিন্তু জনগণ তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন জনগণের সম্মিলিত শক্তি কারাগারের লৌহকপাট ভেঙে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবেই।