
প্রতিদিনই নতুন নতুন রেকর্ড গড়ার পথে পেঁয়াজ। কেউ থামাতে পারবে না এর মূল্যের গতি। পেঁয়াজ যেন অপ্রতিরোধ্য। রাজধানীর কাঁচাবাজারে এখন সব থেকে বেশি দামের পণ্যের তালিকায় সবার উপরে স্থান করে নিয়েছে পেঁয়াজ। কোনো সবজি-ই তার ধার কাছে নেই। আদা, রসুন এমনকি মাছ-মাংসেরও ওপরে চলে গেছে পেঁয়াজের দাম।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, শান্তিনগর অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
শীতের আগাম শাক-সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শালগম, শিম, পালং শাক, মুলা শাক, সরিষা শাকের ভরপুর সরবরাহের মধ্যে এখন বাজারে সব থেকে বেশি দামের সবজি পাকা টমেটো। পাকা টমেটোর পাশাপাশি বাজারে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে গাজর, শিম, বরবটি, নতুন আসা গোল আলু। এর মধ্যে নতুন গোল আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। শিম, গাজর ও বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকার মধ্যে।
বাজারে সব থেকে ভালো মানের পাকা টমেটো বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা কেজি। আর পেঁয়াজের কেজি কোথাও ২৫০ টাকার নিচে মিলছে না। কিছু কিছু বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৩০০ টাকা ছুঁয়েছে।
শুধু কি সবজি, বাজারে এখন সব ধরনের মুরগির থেকে পেঁয়াজের দাম বেশি। লাল কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি। সোনালী মুরগি পাওয়া যাচ্ছে ২২০-২৪০ টাকার মধ্যে। আর বাজার ভেদে বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২৫ টাকা। অর্থাৎ এক কেজি পেঁয়াজ দিয়ে প্রায় তিন কেজি বয়লার মুরগি কেনা সম্ভব।
বয়লার মুরগির মতো এক কেজি পেঁয়াজ দিয়ে দুই কেজি তেলাপিয়া, পাঙাস, (ছোট রুই, মিরগেল) মাছও কেনা সম্ভব। কারণ এ মাছগুলোর কেজি ১৫০ টাকার মধ্যে।
এমনকি মাঝারি সাইজের রুই মাছের দামও এখন পেঁয়াজের থেকে কম। শিং মাছও মিলছে পেঁয়াজের থেকে কম দামে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের রুই মাছ বাজার ভেদে ২০০-২৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর অনেক বাজারেই শিং মাছের কেজি ২২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পেঁয়াজের থেকে সচরাচর একটু বেশি দামেই বিক্রি হয় আদা-রসুন। এবার এ রীতিও বদলে গেছে। বাজারে এখন আদা রসুনের কেজি ২০০ টাকার নিচে।
একই সাথে বেড়েছে ধান চালের দাম উত্তরাঞ্চলের ধান-চালের সবচেয়ে বড় মোকাম নওগাঁয় এক সপ্তাহের ব্যবধানে চিকন চালের দাম প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। আর বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। বাজারে জিরাশাইল ও বিরি-২৮ জাতের ধানের সরবরাহ কমায় চালের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিবস্তা ১ হাজার ৮শ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা হয়েছে। অর্থাৎ বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বেড়েছে প্রায় ২০০ টাকা। এতে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সপ্তাহে চিকন চালের দাম ৩৬ টাকা থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা। ফলে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। আগামীতে এই দাম আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। খুচরা চাল ব্যবসায়ী মহাদেব ঘোষ বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে জিরাশাইল বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৩৬ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। আটাস ২/৩ টাকা বেড়ে ৩৪/৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া স্বর্ণা ৩০ টাকা, কাটারিভোগ ৫০/৫২ টাকা, পাইজাম ৫০/৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রকার ভেদে মোটা চালের দামও কেজিতে ২ টাকা বেড়েছে।