
সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক নেতারা। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ চান তারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে এই সব দাবি তোলেন তারা।
ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লা আমান, ডাকসুর সাবেক জিএস ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, এজিএস নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ।
জেএসডির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আব্দুর রব সভাপতির বক্তব্যে বলেন, “আবরারকে হত্যার মাধ্যমে পুরো জাতিকে হত্যা করা হয়েছে। অবৈধ সরকারের এজেন্ডা হচ্ছে আমাদের কথা বলতে দেবে না, বিরোধী মতবাদকে কথা বলতে দেবে না। আজকে কেউ কেউ ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে চান। ছাত্র রাজনীতি অপরাধ নয়। এটা না থাকলে রাষ্ট্র ভাষা বাংলা হতো না।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্র রাজনীতি না থাকলে এ দেশের গরিব শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করতে পারতো না, গণশিক্ষা হতো না। ছাত্র রাজনীতি না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে কেউ ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে পারে নাই।”
রব বলেন, “রাষ্ট্রকে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত করতে হবে। ১৩ তারিখ আবরারকে নিয়ে শোক মিছিল করতে দেয় নাই। এই দেশের জনগণ সরকারের শোক মিছিল করবে, সেটার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আপনাদের বিচার হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এটার পরিকল্পনা হিসেবে আমরা দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাই না। আপনারা যা করেছেন, সুযোগ পেলে জনগণ আপনাদের পিঠের চামড়া রাখবে না।”
মানববন্ধনে ডাকসুর সাবেক জিএস ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, “আবরার হত্যাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে। যেভাবে ছাত্রলীগ সারা বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে তাতে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। বুয়েটের আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা স্বীকার করেছে বড় ভাইয়ের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এই বড় ভাই কারা তা খুঁজে বের করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব পালন করে নাই, তাই ভাইস চ্যান্সেলরকে পদত্যাগ করতে হবে। বুয়েটের একজন মেধাবী ছাত্র হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না সে জন্য শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।”
বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। ৬ অক্টোবর মধ্যরাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার মাঝামাঝি সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আবরার হত্যাকাণ্ডে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেছেন তার বাবা বরকতুল্লাহ।
ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুয়েট শাখার ১১ জন নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফেনী নদীর পানি বণ্টন ও বন্দর ব্যবহারসহ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় শিবির সন্দেহে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।