
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, মূল দুর্নীতিবাজদের বাদ দিয়ে যাদেরকে ধরা হচ্ছে তারা আসলে চুনোপুঁটি। এমনকি এই চুনোপুঁটিদের সরদারকে ধরতেও সরকারের অবিশ্বাস্য গড়িমসি আমরা দেখলাম।
আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সমসাময়িক ইস্যুতে দলটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মান্না বলেন, ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতিকে গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা করছে- এমন রিপোর্ট আমরা দেখছিলাম বেশ কয়েকদিন ধরেই। দেশের আইন এবং বিচারব্যবস্থা কতটুকু দেউলিয়া হলে কতটুকু সরকারি দলের আজ্ঞাবহ হলে সম্রাটকে ধরার জন্য সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা করতে হয় সেটা বোঝাই যায়। অবশেষে গতকাল সম্রাট গ্রেফতার হয়েছেন।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই গ্রেফতার এখন মজা করার বিষয়ে পরিণত হয়েছে; এ ঘটনায় দিয়ে আরেক ঘটনাকে ধামাচাপা দেবার এই অস্ত্র ব্যবহারে ভোঁতা হয়ে গেছে।
চলমান অভিযান নিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, কিছুদিন আগেই হঠাৎ করে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এই দলটি ক্ষমতায় আছে এবং বাংলাদেশকে দুর্নীতির অভয়ারণ্য বানিয়ে ফেলা হয়েছে এই সময়টাতেই। এই দেশে দুর্নীতি সবসময় ছিল কিন্তু এটা যে ব্যক্তি এবং তীব্রতার এই মুহূর্তে আছে সেটার সঙ্গে আর কোনো সময় কোনোভাবেই তুলনীয় নয়।
মান্না বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবসময় উঁচু গলায় দাবি করা হয়, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্মরণকালের সবচেয়ে উঁচুতে অবস্থান করছে। সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকা খুবই ভালো কথা। কিন্তু সেই সম্পর্ক শুধুমাত্র দেয়ার আমাদের পাওয়ার নয় তাই সেটা আমাদের দেশের জন্য বিপর্যয়কর। দেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলটি এখন পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে যেসব দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে তার প্রায় সবগুলোই শেষ পর্যন্ত একপাক্ষিকই থেকেছে।
তিনি আরও বলেন, ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেয়ার প্রশ্নে মানবিক কারণে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব। সীমান্তে হত্যার মতো অমানবিক কাজ দিনের পর দিন চলছে। এবার সফরে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছিল- এই ব্যাপারেও খুব দৃঢ়ভাবে কথা বলা হবে। সীমান্তে হত্যা পুরোপুরি বন্ধ হবে এ রকম কোনো মানবিক সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ অপর পক্ষ থেকে আদায় করতে পারিনি, ন্যূনতম কূটনৈতিক আশ্বাসও ছিল অনুপস্থিত।
মান্না বলেন, সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিশেষ করে ২০১৪ সালে কোনো ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে যেকোনো দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় কখনো দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। এবারও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। একটা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা উভয়পক্ষের জন্য মঙ্গলজনক হতে হবে। কোন পক্ষ কতটা লাভবান হবে সেটাই কিছুটা তারতম্য মেনে নেয়া যায়, কিন্তু এবার যেসব চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে সেগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে এতে বাংলাদেশের ন্যূনতম স্বার্থ রক্ষিত হয়নি। সর্বপ্রথম আমরা দাবি করব এই চুক্তিগুলোর খুঁটিনাটি জনগণের জন্য প্রকাশ করা হোক। আমরা বিশ্বাস করি তাতে আমাদের সামনে আরও অনেক ভয়ঙ্কর তথ্য বেরিয়ে আসবে।