
বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা বলছেন, সাকিব আল হাসানের কোনও দোষ নেই। সাকিব ভুল করেছেন অবশ্যই। তবে সেটা দোষ নয়। কারণ তাঁদের প্রিয় ক্রিকেটার ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে যুক্ত নন। বরং একাধিকবার তিনি জুয়াড়িদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। দোষ তাঁর এটুকুই, জুয়াড়িদের প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনা তিনি আইসিসির দুর্নীতি দমন শাখার কাউকে জানাননি। যার জন্য শেষমেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁকে দুবছরের জন্য নির্বাসনের শাস্তি দিয়েছে আইসিসি। অর্থাৎ, ভারতের বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে খেলতে পারবেন না সাকিব। বাংলাদেশের জন্য যা বড়সড় ক্ষতি। কিন্তু কার জন্য এমন শাস্তির মুখে পড়তে হল শাকিবকে! কে সেই জুয়াড়ি! জানা গিয়েছে, দীপক আগরওয়াল নামের একজন জুয়াড়ি সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁর আসল নাম বিক্রম আগরওয়াল। সাকিবের পরিচিত কোনও ব্যক্তির কাছ থেকে বাংলাদেশের অলরাউন্ডারের মোবাইল নম্বর জোগাড় করেন দীপক আগারওয়াল। এর পরই সাকিবের সঙ্গে একাধিকবার হোয়াটস অ্যাপে যোগাযোগ করেন তিনি। সাকিবকে তিনবার স্পট ফিক্সিং করার প্রস্তাব দেয় সেই জুয়াড়ি। কিন্তু সাকিব তাঁর প্রস্তাবে প্রতিবার সরাসরি না বলে দেন। কিন্তু সাকিব গোটা ঘটনার কিছুই আইসিসি’র দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা আকসু’কে কিছু জানাননি। আর এটাই তাঁর দোষ। যার জন্য এত বড় শাস্তির মুখে পড়তে হল তাঁকে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে কে এই জুয়াড়ি আরওয়াল! দীপক আগারওয়াল একজন হোটেল ব্যবসায়ী। চেন্নাইয়ে তাঁর দুটি পাঁচ তারার সমান সুবিধাযুক্ত হোটেল রয়েছে। হোটেল ব্যবসাই তাঁকে অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি করে তুলেছিল। আর তিনি তার পর ক্রিকেট বেটিং-এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৭ সালের এপ্রিলে রায়গড় শহর থেকে পুলিশ আগরওয়ালকে আটক করেছিল। জুয়ার কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ একাধিক গেজেট তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সেবার দীপকের সঙ্গে আরও দুই জুয়াড়িকে আটক করেছিল পুলিশ। জুয়াড়ি হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বে এই আগরওয়ালের বেশ পরিচিতি রয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একাধিকবার স্পট ফিক্সিংয়ের চেষ্টা করেছিলেন দীপক। আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট (আকসু) তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। আগরওয়ালের টেলিফোন কল রেকর্ড থেকে শুরু করে চালচলন, থাকা-খাওয়াসহ সবকিছুর উপর তীক্ষ্ণ নজরদারি রয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থার। সূত্র- জি ২৪।