
বিরোধী দলকে নির্মূল-নিশ্চিহ্ন করতে সরকার আদালতকে নগ্নভাবে ব্যবহার করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এর মাধ্যমে এক অশনী সংকেত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ রোববার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশব্যাপী আদিম সহিংসতা, নারী ও শিশু নির্যাতন ও তাদের আগুনে নিক্ষেপ, স্ত্রীর সামনে স্বামীকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা, কিশোরকে নির্যাতনের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা ইত্যাদির মতো হত্যা ও ধর্ষণের গুরুতর অপরাধের ঘটনাগুলো সমাজে, সংবাদমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও সরকারের তাতে টনক নড়ে না। কারণ সরকার নতুন করে আইয়ামে জাহিলিয়াত চালু করেছে। দেশ পরিণত হয়েছে এক বর্বর রাষ্ট্রে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপির নয়জনের ফাঁসি ২৬ জনের যাবজ্জীবন ঘটনা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে সরকারের যে অসহিষ্ণুতা ফুটে উঠেছে তাতে ভিন্নমতকে দেশদ্রোহী হিসেবে দেখা হচ্ছে। সুতরাং বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলোকে যেন অপরাধী ও দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকের মর্যাদায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
রিজভী বলেন, তারা মানুষের বুকের উপর চেপে বসে জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সম্পূর্ণ উন্মার্গগামী হয়ে পড়েছে। যেকোন ভাবেই হোক জবরদস্তি করে এরা টিকে থাকতে চায়। সর্বশেষ ঈশ্বরদীর এ হাস্যকর মামলার রায় জনগণের কাছে স্পষ্ট করেছে যে কি পরিমাণ অপশাসন কুশাসন আর জুলুম চলছে। এই মামলা যাদের ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশের এফআইআরে নাম পর্যন্ত ছিল না। মামলাটির সময় পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে।
পরে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ্ঞাবহ পুলিশকে দিয়ে মামলাটি পূর্ণ তদন্ত করে নতুনভাবে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় ৫২ জন বিএনপি-যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীকে এ মামলায় আসামি বানানো হয়। তাদের অপরাধ তারা বিএনপি করে। এ কারণে বিচারের নামে আওয়ামী প্রহসনের নির্মম শিকার হলেন তারা।
তিনি বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী মধ্যরাতের নির্বাচনের সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে তার অধীন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে এই অগণতান্ত্রিক কাজগুলোকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। ফলে গণতন্ত্র এখন আইসিইউতে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে, নির্বাচনগুলোতে জনগণের রায় প্রতিফলিত না হয় নিয়মরক্ষার আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে ।
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ট্রেনের বহরে গুলির কারণে যদি ফাঁসি আর যাবজ্জীবন হয় তাহলে শত শত, হাজার হাজার খুনের শাস্তি কেমন হতে পারে?
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশব্যাপী আদিম সহিংসতা, নারী ও শিশু নির্যাতন ও তাদের আগুনে নিক্ষেপ, স্ত্রীর সামনে স্বামীকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা, কিশোরকে নির্যাতনের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা ইত্যাদির মতো হত্যা ও ধর্ষণের গুরুতর অপরাধের ঘটনাগুলো সমাজে, সংবাদমাধ্যমে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও সরকারের তাতে টনক নড়ে না। কারণ সরকার নতুন করে আইয়ামে জাহিলিয়াত চালু করেছে। দেশ পরিণত হয়েছে এক বর্বর রাষ্ট্রে।
নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন তিনি।