
গত কয়েক মাস ধরেই দরপতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। দরপতনে থাকায় অবস্থায় আজ ভয়াবহ ধস দেখা দিয়েছে।
রোববার (২১ জুলাই) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে প্রধান মূল্য সূচক কমেছে প্রায় একশ পয়েন্ট। মূল্য সূচক ধসে পড়ায় একদিনেই বিনিয়োগকারীদের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে। রোববার ৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পুঁজিবাজারে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং প্রকৌশল খাতের প্রায় সব শেয়ারের দাম কমেছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের ব্যাপক পতনে লেনদেন শেষ হয়। এদিন ৯৬ পয়েন্ট সূচকের পতনে ডিএসই’র গেল তিন বছর ৭ মাসের সর্বনিম্নে অবস্থানে নেমে এসেছে। লেনদেনের শুরু থেকেই সেল প্রেসারে টানা নামতে সূচক। রোববার লেনদেন শেষে সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। আর টাকার অংকেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কমেছে। আজ দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি ৬৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর ডিএসই’র সূচক ছিলো ৫ হাজার ২৭ পয়েন্ট।
আজ দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৯৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫০৩৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১১৫৭ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৭৯৯ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ২৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির। আর দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি ৬৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
এর আগের কার্যদিবস দিন শেষে ডিএসইর ব্রড ইনডেক্স ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫১৩০ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ০.৭৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১১৭৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ০.৪৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ১৮২৯ পয়েন্টে। আর ওইদিন লেনদেন হয়েছিল ৩৯৫ কোটি ২৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। সে হিসেবে আজ ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ২৬ কোটি ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
এদিকে দিন শেষে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএসইএক্স ১৮৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৮৪টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ২৩১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ১০ লাখ ১৩ হাজার টাকা।
রোববার লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানেই বাজার থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
আজ সব সূচকের পতনের পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৬১ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২৭৩টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির।
এদিকে দরপতনের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিলেও এর পেছনের যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে কারসাজি চক্রকে দায়ী করা হচ্ছে। এসব কারসাজি চক্রের শাস্তির দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনও করেছেন তারা।