
গাইবান্ধা জেলার বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষদের সহায়তা দিতে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন পৌরসভা, রাজনৈতিক দল, এনজিও ও বেসরকারি সংগঠন এগিয়ে এসেছে।
এদিকে জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপির উদ্যোগে ও পৌর আওয়ামী লীগের সার্বিক সহযোগিতায় গত ২০ জুলাই থেকে গাইবান্ধা শহরে বন্যা কবলিত মানুষের খাদ্য সহায়তা হিসেবে রুটি বিতরণ কর্মসূচি শুরু করেছে। পানিবন্দী লোকদের মধ্যে এ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। এজন্য জেলা পাবলিক লাইব্রেরীতে রুটি তৈরী করার জন্য মহিলা আওয়ামী লীগসহ আওয়ামী লীগের মহিলা কর্মীরা এবং স্বত:স্ফুর্তভাবে বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষ নির্বিশেষে এই রুটি তৈরীর কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছে। বন্যা কবলিত এলাকার পানিবন্দী দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে এসমস্ত তৈরী রুটি, গুড় ও ডাল সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলা সেচ্ছা সেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মোস্তাক আহম্মেদ রঞ্জু ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সহ বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করতে দেখা যায়।
এদিকে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন জানান, গাইবান্ধা পৌর এলাকার বন্যা কবলিত পানিবন্দী লোকদের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে ১৫ কেজি চাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি মসুর ডাল ও ১ কেজি লবণ বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি তিনদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সরকারি সহায়তা ও পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে এই ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধার অন্যতম এনজিও এসকেএস ফাউন্ডেশন তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে তাদের পাওয়ার প্রকল্পের সহযোগিতায় ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় প্রতিদিন ৪টি নৌকায় ট্যাংকের মাধ্যমে ৫ হাজার লিটার বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করছে। এছাড়া ইতোমধ্যে সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় নিজস্ব অর্থায়নে ১৭টি এবং ডিপিএইচপি এর সহায়তায় ২৬টি নলকুপ স্থাপন করেছে। তদুপরি সাঘাটা ও ফুলছড়ির বন্যা দুর্গত এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে ল্যাট্টিন স্থাপন করেছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ফ্রেন্ডস এসোসিয়েশন-৯৪ এর উদ্যোগে গাইবান্ধা সদর উপজেলার পূর্বপাড়া, মোহাম্মদ খালেদ স্মরণী, কুটিপাড়া ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে বন্যার্ত ৪শ’ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ১৫ কেজি চাল, ২ কেজি চিড়া, ১ কেজি মুসুর ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি মুড়ি, ৪টি ওরস্যালাইন, ১টি সাবান, ১টি গ্যাস লাইট ও ১ পাতা পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। বন্যা শুরু হতে এ পর্যন্ত এভারগ্রীণ জুম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও জুম বাংলাদেশ স্কুলের উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা বন্যার পানি হতে আসবাসপত্র রক্ষায় সহযোগীতা সহ বড় বড় দুটি ট্যাংকে ভ্যানগাড়িতে করে বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধ বন্যার্তদের মধ্যে সরবরাহ করছে।
বিশ্ব সন্ত্রাস বিরোধী সংগঠনের জেলা শাখা বন্যার্ত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করছে।
এদিকে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির উদ্যোগে সদর উপজেলার কয়ারপাড়া, খেয়াঘাট, বল্লমঝাড়, বাগুড়িয়া, কদমের তল, শহরের পূর্বপাড়া ও কুঠিপাড়ায় বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণ করেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার আহাদ আহমেদ। এসময় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। খন্দকার আহাদ আহমেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং গাইবান্ধা জেলা বিএনপির আয়োজনে এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বন্যার পানি সরে না যাওয়া পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কাজ অব্যাহত থাকবে।