
নিখোঁজ হওয়ার ১১ দিন পর বাংলাদেশের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগ্নে সৈয়দ ইফতেখার আলমকে ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারাকান্দার উপজেলার মধুপুরের বটতলা বাজার এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
সৈয়দ ইফতেখার আলমকে সৌরভ নামেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ যিনি সোহেল তাজ হিসেবে পরিচিত। খবর বিবিসি বাংলার
সৌরভ শারীরিকভাবে অক্ষত থাকলেও মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন। তিনি জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকালে মধুপুরের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী মিস্টার সৌরভকে দেখতে পেয়ে বিষয়টি সোহেল তাজের পরিবারকে ফোনে জানান। পরে ওই ব্যবসায়ীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সৌরভকে উদ্ধার করেন।
তাকে কে বা কারা ধরে নিয়ে গেছে, গত ১১ দিন তিনি কোথায়, কী অবস্থায় ছিলেন, এ বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু জানতে পারেনি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান হোসেন।
এদিকে আজ সকালেই এক ফেসবুক লাইভে সোহেল তাজ সৌরভের উদ্ধার ও সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সেখানে তিনি বলেন, ভোর ৫টা ২৭ মিনিটে আমার মামাতো বোন আমাকে ফোন করে বলেন যে, একজনের কল এসেছে, সেই কলে বলা হয় যে, একটা ছেলেকে রাস্তার পাশে একটি গাড়ি থেকে ফেলে যাওয়া হয়েছে। সেই ছেলেটা খুব ছন্নছাড়া অবস্থায় আছে। পরে স্থানীয়রা তাকে নিরাপদে নিয়ে যায়।
আমি খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে এসপি নিজে সেই স্থান থেকে সৌরভকে উদ্ধার করে কাস্টডিতে নিয়েছেন। সৌরভ এখন নিরাপদে আছে। তাকে এখন পুলিশি প্রহরায় ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
গত ৯ই জুন সন্ধ্যা ৭টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভ অপহৃত হন।
ওই দিন রাতে তার বাবা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পরে শনিবার সোহেল তাজ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেয়া এক পোস্টে তার ভাগনেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সৌরভের পরিবার চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
কয়েকদিন আগে সৌরভের বাবা মাকে নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন সোহেল তাজ এক লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন যে, এর আগে ১৬ ই মে তারিখে আরও একবার চোখ বেধে ঢাকার বনানীর এক বন্ধুর বাসা থেকে সৌরভকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
২৪ ঘণ্টা পর একটি ফর্মে সই নিয়ে ফেরতও দিয়ে যাওয়া হয়। কারা এর পেছনে জড়িত সেটি তারা জানেন বলেও দাবি করছেন তিনি।
বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ নতুন নয়।
তবে দেশটির সাবেক একজন প্রতিমন্ত্রী, যার সাথে ক্ষমতাসীন দলের যোগাযোগ দীর্ঘ দিনের, সেরকম কোন ব্যক্তির রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিরল।