
গাইবান্ধা সদরের ও দিনাজপুরের বিরল থানা এলাকায় চাঞ্চল্যকর পৃথক ২ শিশুকে ধর্ষনের মামলায় পলাতক ২ আসামি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার সদর থানাধীন পশ্চিম কুপতলা (মধ্যপাড়া) গ্রামস্থ মৃত মোকছেদুল ইসলাম এর ১ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ৯ বছরের এতিম শিশুকন্যাকে তার দাদী মোছাঃ মর্জিনা বেগম গত ৫ মে ২০১৯ ইং তারিখ সন্ধ্যায় প্রতিবেশী মোঃ আইয়ুব খান এর বাড়িতে চার্জার লাইটে বৈদ্যুতিক চার্জ করানোর জন্য বলে। শিশুটি লাইটে চার্জ করাতে গেলে গৃহকর্তার বখাটে ছেলে শাকিল মিয়া (১৯) তাকে ঘরের ভিতর নিয়ে মুখ চেপে ধরে জোড় পূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণকালীন সে ছুরি দেখিয়ে ভয় দেখায়। ধর্ষণ শেষে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ছেড়ে দেয় এবং এই বলে হুমকী দেয় যে এ ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ করলে মেরে ফেলা হবে। ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে বিমর্ষ অবস্থায় দেখতে পেয়ে তার দাদী মোছাঃ মর্জিনা বেগম তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে তার প্যান্টে রক্ত দেখিযে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ধর্ষনের শিকার শিশুটির দাদী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে গত ৬ মে ২০১৯ ইং তারিখে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার নং ১৭, তারিখ ৬ মে ২০১৯ ইং।
এ ঘটনার পর থেকে র্যাব বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ছায়া তদন্ত শুরু করে। গ্রেফতার এড়াতে আসামী বিভিন্ন স্থানে আত্নগোপনে থাকে এবং ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করে। র্যাবের অব্যাহত নজরদারীর এক পর্যায়ে ১২ মে ২০১৯ তারিখ র্যাব-১৩, রংপুর এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী শাকিল মিয়া (১৯) গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে।
অপরদিকে, ০৮ মে ২০১৯ ইং তারিখ দিনাজপুর জেলার বিরল থানাধীন কাজিপাড়া বিলাইমারী গ্রামস্থ দরিদ্র ভ্যান চালক মোঃ ছলেমান হোসেন এর ৯ বছর বয়সী শিশুকন্যাকে প্রতিবেশী মোঃ নওশেদ আলী এর বখাটে পূত্র আরিফুল ইসলাম (১৬) শিশুটিকে একা পেয়ে ভয় দেখিয়ে পার্শ্বের ভূট্টাক্ষেতে নিয়ে জোড় পূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটি ব্যাথায় কান্নাকাটি করলে ধর্ষক আরিফুল তাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং পার্শ্বেই থাকা নদীর পানিতে চুবায়। ঘটনাটি অপর এক প্রতিবেশী প্রত্যক্ষ করে ভিকটিমকে উদ্ধার পূর্বক তার পরিবারের কাছে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে বিরল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন যার নং ০৭, তারিখ ৮ মে ২০১৯ ইং। ঘটনার পর থেকেই র্যাব বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে। গ্রেফতার এড়াতে আসামী আত্নগোপনে থাকে এবং ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করে। র্যাবের অব্যাহত নজরদারীর এক পর্যায়ে ১২ মে ২০১৯ তারিখ সিপিসি-১, র্যাব-১৩, দিনাজপুর এর একটি আভিযানিক দল নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দিনাজপুর জেলার বিরল থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী মোঃ আরিফুল ইসলাম (১৬) কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। এই সকল জঘণ্য ধর্ষনকারী মানুষ
নয় এক একজন মানব রুপি দানব বটে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ ধরণের চাঞ্চল্যকর অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে এক কনফারেন্সে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান র্যাব ১৩ এর অধিনায়ক মোজ্জাম্মেল হক বিপিএম।