
মেহেদী হাসান মিরাজ, ২০১৬ সাল থেকেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের নিয়মিত মুখ।
শুরুতে টেস্ট ক্রিকেটার হলেও, ধীরে ধীরে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন এই ক্রিকেটার এবং থিতু হয়েছেন জাতীয় দলে। খবর বিবিসির।
মূলত মেহেদি হাসান মিরাজ ছিলেন অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের তারকা।
সেখান থেকে অনেকেই তাকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা করাও শুরু করেন।
মেহেদি হাসান মিরাজের নেতৃত্ব বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠে এবং সেখানে হেরে প্লে অফ খেলে বাংলাদেশের যুব দল তৃতীয় হয়, যা এই পর্যায়ে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য।
সেই বিশ্বকাপে মেহেদি হাসান মিরাজ ছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা।
৬ ম্যাচে ২৪২ রান আর ১২ উইকেট নিয়েছিলেন। ব্যাটে-বলে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
বোলার মিরাজ উজ্জল, ব্যাটসম্যান মিরাজ মলিন
২০১৬ সালে মিরাজ বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ করে নেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে।
২ টেস্টে ১৯ উইকেট নিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
সাকিব আল হাসান, বেন স্টোকস কিংবা মইন আলী ম্লান হয়ে যান মিরাজের কাছে সেই সিরিজে।
বোলার মিরাজ ওয়ানডেতে গড়ে ৪.৩৬ করে রান দিয়ে ২৭ ম্যাচে বল করে ২৮টি উইকেট নিয়েছেন।
তবে অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের ব্যাটসম্যান মিরাজকে জাতীয় দলে খুব কমই দেখা গিয়েছে।
১৬ ইনিংস ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন মিরাজ ওয়ানডেতে।
যেখানে ৪০৫ বল মুখোমুখি হয়ে ২৯১ রান তোলেন। সর্বোচ্চ ৫১ রান, যেটি তার একমাত্র পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস।
মিরাজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশ দলে মূলত তার কোনো নির্দিষ্ট ব্যাটিং পজিশন নেই ওয়ানডেতে।
“দলের সমন্বয়ের জন্য সব পজিশনে ব্যাটিং করতে হয়েছে, দল আমাকে নিয়ে ভেবেছে সমর্থন দিয়েছে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম এজন্য বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতে পেরেছি, কখনো সফল হয়েছি, কখনো সফল হইনি।”
“যেখানে ব্যাটিং করছি দলের প্রয়োজনে যতটা সম্ভব হয়েছে ততটা চেষ্টা করে যাচ্ছি, অনুর্ধ্ব ১৯ আর এই দলের মধ্যে অনেক পার্থক্য, এখানে অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছেন এখানে আমার সুযোগটা কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক।”, বলছিলেন তিনি।
এশিয়া কাপের ফাইনালে মেহেদি হাসান মিরাজ লিটন দাসের সাথে উদ্বোধনী জুটি গড়েন।
ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে স্পিনারদের সংগ্রাম
ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে পেস বোলাররা বাড়তি সুবিধা পান।
মেহেদি হাসান মিরাজ আয়ারল্যান্ডের সিমিং উইকেটে ভালো বল করেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পুরো দশ ওভার বল করে যথাক্রমে ৩৮ ও ৪১ রান দিয়েছেন, নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
ইংল্যান্ডের উইকেটের জন্য নিজেকে কিভাবে প্রস্তুত করছেন মিরাজ?
“ইংল্যান্ডে স্পিনাররা ঐরকম সুবিধা পাবে না, তবু নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে ভালো করতে এখানে সমর্থন দিয়ে যাওয়া বড় ব্যাপার, আমি চেষ্টা করবো অন্য বোলারদের কিভাবে সাপোর্ট দিয়ে যাওয়া যায়।”
মিরাজ ইংল্যান্ডে খেলতে যাচ্ছেন তার প্রথম বিশ্বকাপ। যদিও এর আগে দুটো বিশ্বকাপ খেলেছেন মিরাজ তবে দুটোই যুব বিশ্বকাপ।
মিরাজের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট
ইংল্যান্ড দল নিয়ে মিরাজের আলাদা স্মৃতিচারণ রয়েছে, এই দলটির বিপক্ষেই মিরাজ প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন।
মিরাজ মনে করেন তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৬ সালের সেই টেস্ট সিরিজ।
“সেটা থেকেই আমার জাতীয় দলে নিয়মিত খেলা, সেটাই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।”
বিশ্বকাপ নিয়ে মিরাজের ভাবনা কেমন?
“ক্রিকেটে চাপটা একটু বেশিই বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার স্বপ্ন নিয়েই যায় সবাই, নিজের মানসিক প্রস্তুতিটা গুরুত্বপূর্ণ এটা ভালো হলে দলের জন্য ভালো কিছু করা সম্ভব হয়,” মেহেদি হাসান মিরাজ।