
রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে একমাত্র উপার্জনক্ষম আপনজনদের হারিয়ে ৩৬ শিশুর ঠাই মিলেছে গাইবান্ধার অরকাহোমসে। স্বজন হারানোর শুন্যতা ও বেদনা বুকে নিয়ে এই শিশুরা ভালো মানুষ হতে চায়।
অনেকেই বড় হয়ে প্রকৌশলি হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে চায়। আর যেন কোন শিশুর পিতামাতাকে মালিক পক্ষের অবহেলায় মৃত্য বরণ করতে না হয় এমনটিই প্রত্যাশা এই শিশুদের ।
আজ বুধবার ভয়াল রানা প্লাজা ট্রাজেডির ৬ বছর। রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে মৃত ও হতাহত শ্রমিকদের পরিবারের ৩৬ শিশুর মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখানে লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও পিতা-মাতার আদরে বেড়ে উঠছে এসব শিশু।
২০১৪ সালের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে চালু হয় অরকা হোমস। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট এ্যাসোসিয়েসন, সংক্ষেপে অরকা। রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে নিহত ও আহতদের পরিবারের ৩৬ শিশুর সকল দায়িত্ব নিয়েছে অরকা হোমস। এদের মধ্যে ২০ জন ছেলে ও ১৬ জন মেয়ে রয়েছে।
তিনতলা ভবন বিশিষ্ট অরকা হোমসে লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থাসহ রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ। রয়েছে শিশুদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা। লেখাপড়ার জন্য পাশেই রয়েছে হোসেনপুর মুসলিম একাডেমি। যেখানে এসব শিশুরা তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করছে।
আমাদের স্বজনদের মৃত্যু ও হতাহত হওয়ার পর আশ্রয় জুটেছে এখানে। আমরা ভালো আছি ,পড়ালেখা করছি এবং মানুষ হওয়ার চেষ্টা করছি। অরকা হোমসে আশ্রিত শিশুরা লেখা-পড়া করে মানুষের মত মানুষ হতে চায়। চায় তাদের পরিবার পরিজনের ভরসার স্থল হতে।
নুর জাহান বেগম, কেয়ারটেকার, অরকা হোমস,রানা প্লাজার এসব শিশুদেরকে পিতা-মাতার
স্নেহে লালন-পালন করছেন অরকা হোম কর্তৃপক্ষ। আর এসব স্বজন হারানো শিশুরাও তাদের কেয়ারটেকারদের মাঝে খুজে নিচ্ছে তাদের বাবা-মা কে।
মোঃ জাহিদুল হক, সহ-সভাপতি, অরকা হোমস, গাইবান্ধা। রানা প্লাজা ট্রাজেডির হতাহত পরিবারের যে শিশুরা এখানে রয়েছে তাদের লেখাপড়া, থাকা-খাওয়া সহ সকল খরচ অরকা হোমস থেকে বহন করা হচ্ছে বলে জানালেন অরকা হোমসের এই কর্মকর্তা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা নামের ভবন ধ্বসে নিহত হয় ১ হাজারেরও বেশি নারী পুরুষ।