
বাংলাদেশের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেছেন শব-ই-বরাত আগামী ২১শে এপ্রিলেই পালিত হবে। তিনি আজ সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এর আগে গত ৬ই এপ্রিল জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় একুশে এপ্রিল শব-ই-বরাত পালনের সিদ্ধান্ত হলেও পরে একটি সংগঠন দাবি করে এটি ২০শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। খবর বিবিসি বাংলার
মজলিসে রুইয়াতুল হিলাল প্রেসিডেন্ট এ বি এম রুহুল হাসান বলেন, ৬ই এপ্রিল খাগড়াছড়ি ও মুন্সিগঞ্জে শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেছে।
যদিও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম বলেছেন ওই দিন চাঁদ দেখার কোনো খবর দেশের কোথাও পাওয়া যায়নি। তারপরে শব-ই-বরাতের তারিখ নিয়ে বিতর্ক হওয়ায় গত শনিবার জরুরি বৈঠক ডাকেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী।
ওই সভাতেই এগার সদস্যের একটি উপ-কমিটি করা হয় বিশেষজ্ঞ ও আলেম ওলামাদের সমন্বয়ে।
আজ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই একুশে এপ্রিল শব-ই-বরাত পালনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
তারিখ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিলো কেনো?
মজলিসে রুইয়াতুল হিলালের প্রেসিডেন্ট এ বি এম রুহুল হাসান বলেছেন, তারা নিয়মিত চাঁদ পর্যবেক্ষণ করেন এবং চাঁদ সংক্রান্ত গবেষণার পাশাপাশি সারাদেশে তাদের স্বেচ্ছাসেবীরাও চাঁদ উঠেছে কি-না সেটি দেখতে কাজ করেন।
যেদিন আমরা চাঁদ খুঁজি তার আগেই আমরা তা অনুধাবন করি। কয়েকটি প্যারামিটার আছে। সবগুলো প্যারামিটারেই অত্যন্ত সম্ভাবনা ছিলো।
তিনি জানান, সেদিন কিছু জায়গায় আকাশ মেঘলা ও কিছু জায়গায় পরিষ্কার ছিলো। সেজন্যই স্বেচ্ছাসেবীদের আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে বলেছিলাম। তার দাবি, ৬ই এপ্রিলেই খাগড়াছড়িতে চাঁদ দেখা গেছে ৬টা ৩৫মিনিটে যা স্থানীয় পর্যায়ে অনেকে দেখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, মুন্সিগঞ্জেও চাঁদ দেখা গেছে সেদিন।
আমরা বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। ইসলামিক ফাউন্ডেশনকেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কেউ আমলে না নিয়ে শাবান মাস ও শব-ই-বরাতের তারিখ ঘোষণা করেছেন।
এ বি এম রুহুল হাসান বলেন, শরিয়ত অনুযায়ী দুজন মুসলমান পুরুষ যদি চাঁদ দেখেন তাহলে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে।
আমরা খাগড়াছড়ি ও মুন্সিগঞ্জ থেকে সতেরো জন সাক্ষী এনেছিলাম, যার মধ্যে মসজিদ মাদ্রাসার ইমামও রয়েছেন।
মজলিসে রুইয়াতুল হিলালের পক্ষ থেকে পরে সংবাদ সম্মেলন করা হলে জরুরি সভা ডাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
উপ- কমিটি কিভাবে কাজ করেছে? ২১শে এপ্রিল বহাল রাখার যুক্তি কী?
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেছেন যে প্রতিটি জেলা থেকে জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট কমিটির লিখিত রিপোর্ট নেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা অফিসগুলো থেকেও রিপোর্ট নেয়া হয়েছে।
উপ-কমিটি দেখেছে যে যারা ভিন্ন দাবি করেছ তাদের সাক্ষী দুর্বল। চাঁদ দেখার দাবি করলেও তারা সময়মতো কাউকে জানায়নি। আবার কেউ কেউ বলেছেন তারা গাছের ফাঁক দিয়ে দেখেছেন কিংবা কেউ বলছেন একবার দেখেছেন তারপর মেঘে ঢেকে গেছে। কমিটির কাছে এসব কথা ভিত্তিহীন মনে হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সচিব বলেন, তারপরেও সব দিক বিশ্লেষণ করে কমিটির সদস্য আলেম ওলামারা নিশ্চিত হয়েছেন যে শব-ই-বরাত একুশে এপ্রিলই পালিত হবে।