
ধর্ষণের পর মা মেয়ের মাথা ন্যারাকারী তুফান সরকারের ভাই যুবলীগের বহিস্কৃত নেতা আব্দুল মতিন সরকারের অবৈধ সম্পদ ক্রোক এবং তার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ নরেশ চন্দ্র সরকার গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেন।
তবে দুদকের পিপি আবুল কালাম আজাদ সোমবার বিকালে এ তথ্য প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, মতিন সরকার বগুড়ার বহুল আলোচিত কিশোরী ধর্ষণ ও মা-মেয়েকে নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে দেয়া মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের বড় ভাই। বর্তমানে তুফান সরকার বগুড়া কারাগারে আছেন।
গত ২০১৭ সালের জুলাই মাসের ওই ঘটনায় গত কয়েক দিন আগে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তার জামিন নামঞ্জুর এবং মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বগুড়ার আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন।
তুফান সরকারের বর্বরোচিত ওই ঘটনা প্রকাশ হলে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক তুফান সরকারকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর পর তার ভাই শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিন সরকারকেও বহিষ্কার করা হয়। দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয় থেকে তুফান ও মতিন সরকারের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে।
গত ২০১৮ সালের ৬ মার্চ মতিন সরকার ও ৭ মার্চ তুফান সরকারকে চিঠি দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। মতিন ২৫ মার্চ ও তুফান ২৭ মার্চ সম্পদের হিসাব দাখিল করেন।
তদন্তে দুদক কর্মকর্তারা মতিনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে তিন কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পান। একইভাবে তার ছোট ভাই তুফান সরকারের বিরুদ্ধেও অসাধু পন্থায় প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও প্রায় ৩০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মেলে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সদর থানায় মতিন সরকার ও তুফান সরকারের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেন।
বগুড়ায় দুদকের পিপি আবুল কালাম আজাদ জানান, মতিন সরকারের মামলাটির তদন্ত চলছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা তার সম্পত্তি এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাব স্থানান্তর বন্ধে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আবেদন করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত উল্লিখিত আদেশ দেন। ফলে মতিন সরকার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সঞ্চিত অর্থ কাউকে স্থানান্তর করতে পারবেন না।