
নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১ এপ্রিল পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এদিন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত ৩ মার্চ মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের অভিযোগ গঠন শুনানি শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম। এরপরে ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এসএম সাহেদুর রহমান।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদে, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সাংসদ এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এর আগে সোমবার বহুল আলোচিত গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছে আদালত।
সোমবার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ দিলদার এ দিন ধার্য করেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া বলেন, আজ খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করার কথা ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
আইনজীবী আরো বলেন, খালেদা জিয়া হাজির না হওয়ায় মামলার অন্যতম আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার অভিযোগ গঠনের শুনানি পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক নতুন দিন ধার্য করেছেন।
২০১৬ সালের ৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়া আত্মসমর্পণ করে জামিন পান।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদক উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা।
মামলার ২৪ আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া ও জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী মারা গেছেন। আসামির সংখ্যা এখন ২০ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোর সঙ্গে চুক্তি সইয়ের ফলে সরকারের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। এ ছাড়া গ্যাটকোকে ঠিকাদারি কাজ দেওয়ার বিনিময়ে অবৈধভাবে আরাফাত রহমান কোকো ও ইসমাইল হোসেন সায়মন দুই কোটি ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৬ টাকার আর্থিক সুবিধা নেন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়।