
আসরে শুরুটা তাদের ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচেই হেরে বসে দুর্বল চিটাগং ভাইকিংসের কাছে। তাই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শুরু থেকেই সতর্ক ছিল রংপুর রাইডার্স। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার রিলি রুশোর চমৎকার দৃঢ়তায় খুলনা টাইটানসের সামনে ছুড়ে দিয়েছে ১৬৯ রানের একটা চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ।
রোববার মিরপুরে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা রংপুর এদিনও আহামরি কিছু করতে পারেনি। প্রথম ম্যাচের মতোই বাজে শুরুর খেসারত দিতে গিয়ে স্কোরকার্ডকে হৃষ্টপুষ্ট করা হয়নি তাদের। তবু রক্ষা যে ওপেনার রাইলি রুশো এক পাশ আগলে রেখে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রানচাকা ঘুরিয়ে গেছেন। সঙ্গে রবি বোপারার দায়িত্বশীল ব্যাটিং ৩ উইকেটে ১৬৯ রানে পৌঁছে দেয় রংপুরকে। জবাবে দারুণ শুরু পেয়েও জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারেনি খুলনা। তাদের ইনিংস থামে ১৬১ রানে।
এই মিশনেও তারা সফল। পাওয়ার প্লের ছয় ওভার থেকে ৬১ রান আদায় করে নেওয়া খুলনার এই দুই ব্যাটসম্যান পরের ৫ ওভারে ৩০ রান তুলে দলকে ৯০ রানে পৌঁছে দেন। দারুণ ব্যাটিংয়ে জয় যখন ক্রমেই দৃষ্টিসীমায় চলে আসছিল, এমন সময় থামতে হয় জুয়ায়েদ সিদ্দিকীকে। ৩০ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের বিদায়ে বিপাকেই পড়তে হয় খুলনাকে।
পরের ১৮ রানের মধ্যে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও পল স্টার্লিং। ফেরার আগে ৪৬ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৬১ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেন স্টার্লিং। এই দুই ব্যাটসম্যানকে থামিয়ে খুলনার রান চাকাতেও লাগাম টেনে দেন রংপুরের শফিউল ইসলাম ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মুহূর্তেই এই অবস্থা বদলে দেন।
উইকেটে গিয়েই হাতখুলে খেলতে থাকেন তিনি। যদিও সঙ্গে থাকা আরিফুলের কাছ থেকে সেভাবে সাহায্য পাননি তিনি। দরকারি রানের ব্যাপারটি মাথায় রেখে ব্যাট চালাতে পারেননি আরিফুল। যা করার মাহমদুউল্লাহকেই করতে হয়। কিন্তু শেষ করা হয়নি তার। ১৭ বলে ২৪ রান করে মাশরাফির দৃষ্টিনন্দন এক ক্যাচে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। বাকি কাজটা সারতে পারেননি আরিফুল, জহুরুল হক, কার্লোস ব্রাথওয়েটরাও। ৮ রানের ব্যবধান শেষপর্যন্ত থেকেই যায়।
এরআগে ব্যাটিং করা রংপুর রাইডার্স প্রথম ম্যাচের মতোই অগোছালো শুরু করেছে। এদিনও চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ওপেনার মেহেদী মারুফকে। উদ্বোধনী ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ১০ বলে এক রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান এই ম্যাচেও টি-টোয়েন্টির মেজাজ ধরতে পারেননি। ১৩ বলে ৫ রান করে বিদায় নেন তিনি।
১৮ রানে প্রথম উইকেট হারানো রংপুরকে পথ দেখাতে শুরু করেছিলেন অ্যালেক্স হেলস। ওপেনার রাইলি রুশোর সঙ্গে ভালোই সাবলীল দেখাচ্ছিল এই ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে। পথটা দীর্ঘ হয়নি তার। ১৫ রান করে খুলনার আফগান চায়নাম্যান বোলার জহির খানের শিকারে পরিণত হতে হয় তাকে। মোহাম্মদ মিঠুনও আশা জাগিয়ে উইকেটে টিকতে পারেননি। ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এরপর আর বিপাকে পড়তে হয়নি রংপুরকে। রবি বোপারাকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের বাকিটা সময় পার করে দেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো। মূলত এই সময়েই টি-টোয়েন্টি মেজাজের ব্যাটিং দেখা গেছে। এই জুটি ১০৪ রান যোগ করে স্কোরকার্ডে। এই জুটিতেই লড়াইয়ের রসদ পায় রংপুর। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করা রুশো ৫২ বলে ৮টি চার ২টি ছক্কায় ৭৬ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলেন।
আগের ম্যাচে রংপুরকে পথ দেখানো বোপারা এই ম্যাচেও ত্রাতার ভূমিকায় ছিলেন। ডানহাতি এই ইংলিশ অলরাউন্ডার ২৯ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৪০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। রংপুরের যাওয়া তিনটি উইকেট ভাগাভাগি করে নেন খুলনা টাইটান্সের আলী খান, জহির খান ও কার্লোস ব্রাথওয়েট।