
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে হবিগঞ্জের লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত আলী ও কিশোরগঞ্জের আমিনুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অপহরণ, নির্যাতন, লুটপাট, গণহত্যার মত মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সাতটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার দুপুরে বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন।
রবিবার রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করে আদালত। এর আগে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল গত ১৬ আগস্ট মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।
রাষ্ট্রপক্ষে এই মামলার প্রসিকিউটর ছিলেন রানা দাশগুপ্ত ও রেজিয়া সুলতানা চমন।পলাতক দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম।
রেজিয়া সুলতানা চমন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আড়াই মাস আগে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছিল। আজ সেই রায় দিল ট্রাইব্যুনাল।’
অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর লিয়াকত আলী ও আমিনুল ইসলামের বিচার শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আইনজীবীদের প্রারম্ভিক বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে ওই বছর ৪ ডিসেম্বর শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। এই রায়টি ট্রাইব্যুনালের ৩৫তম রায়।
মামলার অভিযোগপত্রের তথ্য অনুযায়ী, লিয়াকত একাত্তরে ছিলেন মুসলিম লীগের কর্মী। আর আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী ওই সময়ে ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন।
লিয়াকত আলী ২০০৩ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সভাপতি থাকা অবস্থাতেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিন থানা হবিগঞ্জ জেলার লাখাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে ব্যাপক যুদ্ধাপরাধ ঘটান এই দুই আসামি।
২০১৬ সালের ১৮ মে সন্দেহভাজন দুই যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হওয়ায় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শেষ পর্যন্ত তাদের পলাতক দেখিয়েই বিচার চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় আদালত।