
নিউজ ডেস্ক
ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সকাল থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়।
এসময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং তাদের সমর্থকদের ভিড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় কার্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকা। খবর বিবিসির।
সকাল থেকে খণ্ড খণ্ড হয়ে বিভিন্ন দিক থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যানার ফেস্টুনসহ দীর্ঘ মিছিল মূল ফটকের সামনে আসতে দেখা যায়।
স্লোগান আর মিছিলে সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশের। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিন বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নীলফামারী-৪ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন ফরম কেনেন কণ্ঠশিল্পী বেবি নাজনীনও। এসময় তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে এবং আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাদের আশীর্বাদ নিয়েই আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।’
‘দল তো অনেক চাঙ্গা আছে, জনগণও সঙ্গে আছে। সবাইকে সাথে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব। তবে নির্বাচন কেমন হবে সেটা নির্ভর করছে নির্বাচনী পরিবেশের ওপর।’
স্থানীয় নির্বাচন-গুলোয় কারচুপির অভিযোগ এনে জাতীয় নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ফরিদপুর-২ আসনের মনোনয়নপত্র নিতে আসা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
এসময় তিনি দলের সাত দফা দাবির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
‘প্রত্যেকটা লোকাল নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করেছি। আমরা জানতাম সেই নির্বাচনগুলো সঠিক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবেনা। তারপরেও আমরা গিয়েছি, সারা পৃথিবীকে এটা দেখানোর জন্য যে এই সরকারের অধীনে কখনোই কোন নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।’
‘তারপরও আমরা এবারের নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং সাত দফা দাবি নিয়েই আমরা নির্বাচনে আছি।’
বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যেই আট শতাধিক মনোনয়ন পত্র সই করা হয়েছে বলে বিএনপি অফিস থেকে জানানো হয়।
বিকেল ৪টার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হলেও এখন রাত ৮টা পর্যন্ত এই মনোনয়নপত্র বিক্রি চলবে বলে জানায় তারা।
দলীয় সম্মেলন কক্ষে একের পর এক মনোনয়নপত্র সই আর হস্তান্তরে ব্যস্ত দেখা যায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে।
সরকারের সঙ্গে দুই দফা সংলাপে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কোন দাবি না হওয়ায় অনেকটা আশা নিরাশার মধ্যেই নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা জানান তিনি।
‘নির্বাচন কেমন হবে সেটা বলা কঠিন কেননা গণতন্ত্রের আন্দোলনে আমাদের দাবিগুলো এখনো মেটানো হয়নি। তবুও আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনকে নিয়েছি। আমাদের দাবি অব্যাহত আছে। আমাদের দাবি পূরণের লক্ষ্যেই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। অনেকটা ভগ্ন হৃদয় নিয়েই। তবে আমি মনেকরি জনগণ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপির সঙ্গে থাকবে।’
সর্বশেষ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল বিএনপি।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি না মানায় দলটি ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল।
এবার দশ বছর পর সেই দাবি আদায় ছাড়াই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে তারা।
তবে গতবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাকে ভুল বলতে নারাজ রুহুল কবির রিজভী।
এসময় তিনি জনগণের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করার কথা জানান।