
একে একে চারটি বিয়ে করেন ইসমাইল হোসেন। বিয়ের পর সে সব স্ত্রীকে একে একে তালাক দেন তিনি। এরপর পঞ্চম বিয়ে করতে এসে ঘটল বিপত্তি। বিয়ের আয়োজনও প্রায় সম্পন্ন, তাও আবার ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে জোর করে ধরে এনে।
এমন সংবাদ পেয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে সময় মতো হাজির হলেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম রওশন কবীর। এরপর ঘটনাস্থলে সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন বর ইসমাইল হোসেনের ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত ইসমাইল হোসেন (৩৩) ওই গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রাজারামপুর ইউনিয়নের হাসিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ৩৩ বছর বয়সী ইসমাইল হোসেন ইতিমধ্যেই ৪টি বিয়ে করে চার স্ত্রীকেই তালাক দিয়েছেন। তালাকের পর গত বুধবার চতুর্থ স্ত্রীকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে বাবার বাড়িতে রেখে আসে ইসমাইল। স্ত্রীকে রেখে সঙ্গে নিয়ে আসেন চতুর্থ স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া ১৪ মাস বয়সী এক শিশু কন্যাকে। তবে এখনও মায়ের জন্য কান্না থামেনি সেই ১৪ মাস বয়সের শিশুটির।
স্থানীয়রা আরও জানায়, সেই শিশুটির কান্না না থামতেই গত বৃহস্পতিবার ইসমাইল হোসেন ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার গেদুয়া ইউনিয়নের পিপলডাঙ্গী গ্রাম থেকে জোর করে ধরে নিয়ে আসে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীকে। শুক্রবার দুপুরে সেই কিশোরীকে জোরপুর্বক বিয়ের আয়োজন চলছিল দিনাজপুরের বিরল উপজেলার হাসিলা গ্রামে ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে।
পরে জুম্মার নামাজের পর যেই মুহুর্তে কলমা পড়ে জোরপুর্বক বিয়ে করা হবে ওই কিশোরীকে। ঠিক সেই মুহুর্তে বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম রওশন কবীর। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম রওশন কবীর।
এরপর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ এর ৭ ধারা মতে বর ইসমাইল হোসেনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম রওশন কবীর জানান, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। দিনাজপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই আইনের ধারায় এটিই প্রথম রায় বলে জানান ইউএনও।