
তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল-হাসান তার আঙুলের চোটের চিকিৎসা করাতে অস্ট্রেলিয়া গেছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন যে, তার বাঁ-হাতের কড়ে আঙুলটি হয়তো আর কোন দিনই আগের অবস্থায় ফিরে আসবে না, তবে চিকিৎসার পর ক্রিকেট খেলা তিনি চালিয়ে যেতে পারবেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিকিৎসক ডা. দেবাশিস চৌধুরী ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যগত দিকগুলো দেখাশোনা করেন।
তিনি বলেন, ‘সাকিব ঠিকই বলেছে, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ডাক্তাররা তাকে ধারণা দিয়েছেন যে অপারেশন করলেও এই আঙুলের জয়েন্টটি শতভাগ ঠিক না-ও হতে পারে – কিন্তু তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে ৬০%-৭০% সেরে উঠলেই তার ব্যাটিং-বোলিং করতে কোন সমস্যা হবে না’।
এ বছর ২৭শে জানুয়ারি ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ফিল্ডিং করার সময় বাঁ হাতের কনিষ্ঠায় চোট পান সাকিব। আঙুলটির দ্বিতীয় জয়েন্টের হাড় ছুটে যায় এবং লিগামেন্টও ইনজুরি হয়।
এর পর তাকে ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা, এবং ছয় সপ্তাহের বিশ্রামের পর অস্ট্রেলিয়ায় যান সাকিব। মেলবোর্নে স্পোর্টস সার্জন ডা. গ্রেগ হয় তাকে দেখেন। তাকে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেয়া হয়।
পরে আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে আরেক জন হ্যান্ড সার্জন ডা. লুইস ইস্টলিখ তাকে দেখেন। সেখানেও তাকে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেয়া হয়।
‘দুজন ডাক্তারই বলেছেন যে শেষ পর্যন্ত হয়তো অপারেশন লাগতে পারে, কিন্তু যতদিন সম্ভব অপারেশন ছাড়া অন্যভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে সাকিব আল-হাসান খেলা চালিয়ে যেতে পারেন। এর পরও যদি খেলতে কষ্ট হয় তাহলে অপারেশনের কথা ভাবা হবে,’ বলেন ডা. চৌধুরী।
তবে এশিয়া কাপের সময়ও ব্যথানাশক ওষুধ নিয়ে কয়েকটি ম্যাচ খেলার পর তার ব্যথা বেড়ে যায়। এর পর দেশে ফিরে আসেন সাকিব। পরীক্ষা করে দেখা যায় যে তার আঙুলে সংক্রমণ হয়েছে।
ডা. চৌধুরী বলেন, সংক্রমণ সারিয়ে তোলার জন্য তাকে দুবার চিকিৎসা দেয়া হয়, এবং এর পরই তাকে হাড়ের সংযোগস্থলে সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের দেখানোর জন্য অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হয়েছে।
‘মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইনফেকশনটা পুরোপুরি সেরেছে কিনা, আর কিছু করার আছে কিনা তা সাকিব বুঝে আসবে, আর এর পর অবস্থা বুঝে অপারেশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। কারণ ইনফেকশন না সারলে অপারেশন করা সম্ভব না’।
অপারেশনের সিদ্ধান্ত মূলত বিদেশের সার্জনরাই নেবেন বলে ডা. চৌধুরী উল্লেখ করেন। তাহলে কি চোট পাবার পর মাঝখানের সময়টা স্টেরয়েড নিয়ে না খেলে বরং দীর্ঘমেয়াদি বিশ্রাম নিলেই ভালো হতো?
এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. চৌধুরী বলেন, ‘সাকিব আমাদের সিনিয়র এবং অভিজ্ঞ প্লেয়ারদের একজন। তারা নিজেরাই এসব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে ঝুঁকি নিয়ে খেলা ঠিক হবে কিনা , চিকিৎসকরাও তাদের গাইডলাইন দেন’।
‘শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তটা খেলোয়াড়কেই নিতে হয় যে তিনি খেলবেন কি না’।