
২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি নাশকতার চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ঢাকা লক্ষীপুর রুটে আল রিয়াদ এক্সপ্রেস বাসের যাত্রা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা ন্যায় বিচার চাই। আমি নিজেও তো এই হামলায় আহত হয়েছি। আমাদের নেত্রীর একটা কানের শ্রবণ শক্তি চলে গেছে। আইভি রহমানসহ ২৪জনের প্রাণের প্রদীপ চিরদিনের মতো নিভে গেছে। কাজেই এই ধরণের হত্যাকান্ডের বিচার বাংলাদেশে হবে না এই ইমপিউনিটি কালচার গড়ে তুলবো?
ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। সবাই জানে এর মাষ্টার মাইন হচ্ছে হাওয়া ভবন, তারেক জিয়া। এখন সত্য কে আঁড়াল করে লাভ নাই। তারপরও আমরা এই ব্যাপারে রায়ের আগে কোন কমেন্ট করতে চাই না। কিন্তু ন্যায় বিচার যেন আমরা পাই। আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি আদালতে।
এই রায় নিয়ে তৃর্ণমূলে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা বা কোন প্রতিক্রিয়া থাকবে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। আমরা ন্যায় বিচার চাই। ন্যায় বিচার ছাড়া আমাদের আর কোন প্রতিক্রিয়া নেই। বিএনপি এটাকে নিয়ে যদি কোন সমস্যা তৈরি করতে চায়, যদি সহিংস নাশকতা করতে চায়, সেটাকে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর অবস্থানে আছে।
আমরা জানি এই মামলা রায় নিয়ে তারা এখন থেকে বড় ধরনের নাশকতা ও সহিংসতার পরিকল্পনা নিচ্ছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে এটা ২০১৪ সাল নয়, এখন ২০১৮ সাল। সেই ধরণের কোন অপচেষ্টা হলে প্রতিরোধ করবে দেশের জনগণ। আমাদের লাগবে না। সহিংসতার উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে যা করার দরকার হয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা করবে। প্রয়োজনে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।
জাতীয় ঐক্যের ৫ দফার দাবি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, পাঁচ দফার ভিত্তিতে পাঁচ মিশালী জাতীয় ঐক্য। জাতির কাছে আবেদন, এই জগা খিচুরী ভাঙ্গন প্রবণ ঐক্য, জাতির কাছে আবেদনহীন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে আওয়ামী লীগ ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করে। মঙ্গলবার সকালে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
এদিকে ইতিহাসের বর্বরোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল বুধবার। ১৪ বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক শাহেদ নুর উদ্দীন রায়ের দিন ধার্য করেন।
একইসঙ্গে এই মামলায় জামিনে থাকা আট আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই আট আসামির মধ্যে সাবেক দুই আইজিপি আশরাফুল হুদা এবং শহুদুল হকও রয়েছেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাহজাহান যুক্তি তুলে ধরেন। এরপর সাইফুল ইসলাম ডিউকের পক্ষে যুক্তি দেন আব্দুর রেজ্জাক খান ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। আর বেলা একটা ৫৩ মিনিটের দিকে রায়ের তারিখ জানান বিচারক।
এই মামলার ৫২ জন আসামিদের মধ্যে আছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিণ্টু, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ডিউক।