
খালেদা জিয়া আমাকে বিনাবিচারে টানা ৬ বছর জেলে রেখেছেন, অমানুষিক নির্যাতন করেছেন। বাংলাদেশে সব চেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছি আমি এবং জাতীয় পার্টি। ভাগ্যের পরিহাস খালেদা জিয়াই এখন কারাগারে আছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা-১৭ আসনের কচুক্ষেত এলাকায় গণসংযোগকালে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসব কথা বলেন।
‘জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে খালেদা জিয়াকে আমি বাড়ি দিয়েছিলাম, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ দিয়েছিলাম। আর খালেদা জিয়া আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। জেলখানায় চিকিৎসা দেওয়া হয়নি, ঈদের নামাজ পর্যন্ত পড়তে দেওয়া হয়নি।’
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, খালেদা জিয়া আমাকে বিনাবিচারে টানা ৬ বছর জেলে রেখেছেন, অমানুষিক নির্যাতন করেছেন। বাংলাদেশে সব চেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছি আমি এবং জাতীয় পার্টি। ভাগ্যের পরিহাস খালেদা জিয়াই এখন কারাগারে আছেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নুরু, আমানত হোসেন আমানত, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল হক, সুলতান আহমেদ সেলিম, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. হেলাল উদ্দিন, নাসির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা মানুষ খুন করিনি, আমাদের হাতে রক্তের দাগ নেই। তাই আল্লাহর রহমত আর সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় এখনো বেঁচে আছি। জাতীয় পার্টি এখন শক্তিশালী দল, আগামী নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে প্রস্তুত।
স্থানীয় জনসাধারণের উদ্দেশ্যে এইচএম এরশাদ বলেন, ঢাকা-১৭ আসন রাজধানীর অভিজাত এলাকা, এখনকার সর্বস্তরের মানুষের কাছে জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে সাধারণ মানুষ আমাকে প্রায় দেড় লাখ ভোট বেশি দিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন। আবারো নির্বাচন করবো, দেশের মানুষকে গুম, খুন থেকে মুক্তি দেবো।
জাপা আমলে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ১০ হাজার মাইল পাকা রাস্তা করেছি, উন্নয়নের জন্য এলজিআরডি গঠন করেছি, ৪৬০টি উপজেলা করেছি, ২১ জেলা থেকে ৬৪টি জেলায় উন্নীত করেছি। আমরা যে উন্নয়ন করেছি, আর কোনো সরকার তা করতে পারেনি।
‘খবরের পাতা খুললেই শুধু হত্যা আর রক্তের খবর। সড়কে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে, কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। কারো যেনো কিছু যায় আসে না! এভাবে চলতে পারে না, মানুষ পরিবর্তন চায়। আমরাই দেশের ভাগ্য বদলে দিতে পারবো,’ যোগ করেন তিনি।
দেশে সুশাসন নেই দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, আমরা নির্বাচনে জিতে দেশে সুশাসন দেবো।
‘আমরা ছাড়া কেউ এ দেশে সুশাসন দিতে পারেনি। আবারো মানুষের সামনে এসেছি, আমরা বিজয়ী হয়ে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে চাই।’
এরশাদ বলেন, আমাদের হাতে শুরু হওয়া ফ্লাইওভার, উপজেলা পদ্ধতিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন-কর্মকাণ্ড খালেদা জিয়া বন্ধ করে দেশের অনেক ক্ষতি করেছিলেন। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, জাতীয় পার্টিও সংগঠিত হয়েছে। দেশের মানুষ মুক্তি চায়, আমরা নির্বাচনে জিতে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবো, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, তিনটি আসনে নির্বাচন করবো এর মধ্যে ঢাকা-১৭ এবং রংপুর সদর নিশ্চিত হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত জনতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করতে সমর্থন জানান।
এ সময় মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশের ২/১টি আসন বাদ দিয়ে, যেখানে নির্বাচন করবেন, সেখানেই বিজয়ী হবেন। প্রমাণ হয়েছে, তিনি দেশের অকৃত্রিম বন্ধু। প্রমাণ হয়েছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছাড়া দেশের মানুষকে কেউ শান্তি ও স্বস্তি দিতে পারেনি।