
‘বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে ভোট ভোট খেলা শুরু করেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে কেরাণীগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক ফোরাম আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। স্বেচ্ছাসেবক ফোরামের সভাপতি মো.সোহেল রানার সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো কথা বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুণ রায় চৌধুরী, বাগেরহাট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
গয়েশ্বর রায় বলেন,‘এখন ভোট ভোট খেলা চলছে। ভোট ভোট খেলা খেলে সরকার তাদের অপকর্মগুলো আড়াল করতে চায়।’
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন,‘একটি পত্রিকায় দেখলাম, বিএনপির ৩০০ আসনের প্রার্থীর নাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের টেবিলে। তারেক রহমানের টেবিলে ৩০০ নাম কেন? কমপক্ষে ৯০০ নাম আছে। এমনকি ওই প্রতিবেদনে কয়েকজন মৃত মানুষের নামও আছে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘যেদিন নিউজটি হয়েছে, ওই দিনই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার টেলিফোনে কথা হয়। উনার কাছে আমি জানতে চাইলাম, আপনি কি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ফেললেন? উনি শুনে হাসলেন। বললেন, ‘আমি শুনেছি, ৩০০ আসনে…। শোনার পরে আমি আলমারি ও টেবিল তন্নতন্ন করে খুঁজলাম। কিন্তু কোনো নামের তালিকা খুঁজে পেলাম না! উনারা কোথা থেকে পেলেন? উনারা যদি আমাকে একটু দিতেন তাহলে উপকৃত হতে পারতাম। সাংবাদিকদের বন্ধুদের সঙ্গে আপনি যদি কথা বলেন তাহলে আমার এই আহ্বানটি জানাবেন।’ এই হচ্ছে তাদের অবস্থা।’
সভায় চলমান কোটা আন্দোলন নিয়েও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কথা বলেন। তিনি বলেন,‘নৃ-তাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে কোটা পদ্ধতির অপব্যবহার হচ্ছে। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, সচিবও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে তার চাকরির মেয়াদ অতিক্রম করছেন।’
প্রতিবাদ সভায় ভারতকে শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বন্ধু উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘সরকারের এই খেলায় আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু দেশও রয়েছে। তবে এই বন্ধু বাংলাদেশের নয়। বাংলাদেশের একজনের। তার নাম শেখ হাসিনা। একটা পার্টির। এটা যদি দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করে। আর সেই ভাবনা থেকে যদি মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে, সেই দায়টা কার?’
গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া জেলখানায় বন্দী উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘আজ আমাদের মা জেলখানায়, ওনার ছেলে দেশের বাইরে। এর পরও অনেকে (বিএনপির নেতারা) বলেন, ভাইকে (তারেক রহমান) একটু বলেন, আমাকে একটু নিচে দিলো, ছোট দিলো! এই যে বিষয়গুলো…!’
খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে গয়েশ্বর আরো বলেন, ‘আজ তিনি অন্ধকার কারাগারে, আমাদের শেষ ভরসা তারেক রহমান। তাদের রক্ষা করতে হবে। তা নাহলে জাতীয়তাবাদী শক্তি হুমকির মধ্যে পড়বে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাসার মধ্যে না থেকে স্বৈরাচার সরকারকে হটাতে মাঠে-ঘাটে নামতে হবে। কারণ, আন্দোলনের বিকল্প নাই। জনগণ সুযোগ পেলে জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে। এই সু্যোগটা সৃষ্টি করতে হবে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে। তখন জনগণ যথাযথভাবে সরকারকে উত্তর দিতে সক্ষম হবে।’