
স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে ১৮ রানে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। এনিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সাফল্য পেল টাইগাররা।
সেন্ট কিটসে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের ১০৩ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৬৭ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০১ রান সংগ্রহ করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। জবাবে ৩০২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৮৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় উইন্ডিজ।
খেলার শুরু থেকেই সতর্ক ছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে টানা তৃতীয় ম্যাচে উইকেট হারান এভিন লুইস। ১০.১ ওভারে ৫৩ রানের জুটি গড়ে গেইলকে রেখে মাঠ ছেড়ে যান তিনি। তবে গেইল বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান বাংলাদেশের জন্য। লুইসের সঙ্গে পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটির পর শাই হোপকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ২২তম ওভারের পঞ্চম বলে গেইলকে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ বানান রুবেল হোসেন।
তবে গেইলের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে প্রতিরোধ গড়ে ক্যারিবীয়রা। ৪০ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৪৯তম হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। রুবেল হোসেন নিজের দ্বিতীয় ওভারে থামান গেইল ঝড়। ৬৬ বলে ৬ চার ও ৫ ছয়ে ৭৩ রান করেন উইন্ডিজ ওপেনার।
১০৫ রানে ক্যারিবিয়ানরা দ্বিতীয় উইকেট হারালে হেটমায়ারকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান হোপ। তাদের ৬৭ রানের জুটি ভাঙেন মিরাজ। হেটমায়ারকে ৩০ রানে বোল্ড করেন তিনি। মিরাজ তার পরের ওভারে কিয়েরন পাওয়েলের উইকেট পেতে পারতেন। কিন্তু সাব্বির রহমান ক্যাচ ফেলে জীবন দেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানকে। পরের বলে ফিফটি পূর্ণ করেন হোপ। যদিও ওই ওভারের পঞ্চম বলে মাশরাফির থ্রো থেকে মিরাজ রান আউট করেন পাওয়েলকে (৪)।
তবে যতক্ষণ হোপ ছিলেন, বাংলাদেশের জন্য অস্বস্তির সময় কেটেছে। মাশরাফি তার নবম ওভারের প্রথম বলে তাকে ডিপ মিড উইকেটে সাকিব আল হাসানের ক্যাচ বানান। ৯৪ বলে ৫ চারে ৬৪ রান করেন হোপ। ৪৮তম ওভারের প্রথম বলে হোল্ডারকে (৯) রুবেলের ক্যাচ বানান মুস্তাফিজ।
৪৯তম ওভারে রুবেল হোসেনকে আক্রমণে ফেরান মাশরাফি বিন মুর্তজা। অধিনায়ককে হতাশ করেননি রুবেল। দুর্দান্ত বোলিংয়ে দিয়েছেন মাত্র ৬ রান। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ২৮ রান। মুস্তাফিজ মাত্র ৯ রান দিলে ১৮ রানে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি ২টি ও রুবেল, মিরাজ, মোস্তাফিজ নেন ১টি করে উইকেট।
এর আগে তামিমের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে দলীয় ৩৫ রানের মাথায় মাত্র ১০ রান করে এনামুল হক বিজয় আউট হন। তবে দ্বিতীয় জুটিতে ৮১ রান করে দারুণ অবদান রাখেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। ৩৭ রান করে সাকিব আউট হলে তামিমের ১০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস বাংলাদেশকে এনে দেয় ৬ উইকেটে ৩০১ রান। তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দারুণ দুটি ইনিংস খেলে দলকে বড় সংগ্রহ গড়ে দিতে অন্যতম অবদান রাখেন।
দীর্ঘদিন পর ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছড়ান মাশরাফি। তিনি ২৪ বলে ৩৬ রান করেন। তাঁর এই ইনিংসে চারটি চার ও একটি ছক্কার মার ছিল। আর মাহমুদউল্লাহ ৬৭ রান করে ক্যারিয়ারের ১৯তম ফিফটি ঝুলিতে পুরেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন জেসন হোল্ডার ও অ্যাশলে নার্স।
ম্যাচটি জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয়বারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সাফল্য পেল বাংলাদেশ। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করেছিল সাকিব-তামিমরা। এছাড়া, ২০১২-১৩ মৌসুমের নিজেদের মাটিতে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে ৩-২ ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছিল লাল-সবুজের দল।