
দুই মাসের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও হামলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, বিএসপিপি আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা মাঠে নামবো। মাহমুদুর রহমানের রক্ত বৃথা যেতে দেবে না এ দেশের মানুষ। একদিন এর বিচার হবেই। আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।’
অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান আইনে বিশ্বাস করেন বলেই কুষ্টিয়ায় একটি ভিত্তিহীন মামলায় জামিন নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার ওপর যেভাবে পরিকল্পিত আক্রমণ হয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। পুলিশের সামনে আক্রমণ হয়েছে। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হয়নি। সুতরাং আইন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। তাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নাই।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালীম ডোনার, বিএফইউজের সভাপতি সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে ২০ জুলাই তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ভুল-বুঝাবুঝি সৃষ্টি করতে সরকার নানা ধরনের কৌশল গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি: গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে জোট (২০ দলীয় জোট), সেই জোট ছিল, সেই জোট আছে এবং জোট থাকবে। আর জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতি এক জিনিস এবং স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতি আরেক জিনিস। কিন্তু এখানে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এবং বিভিন্ন খবর দিয়ে আমাদের মাঝে একটা ভুল-বুঝাবুঝি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা নিস্ফল হবে। কারণ, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করবো। যাতে করে বর্তমান সরকারকে অপসারণ করতে পারি।’
জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে সরকার নানা ধরনের কৌশল করছেন মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সরকার আমাদের মধ্যে (বিএনপি-জামায়াত) একটা ভুল-বুঝাবুঝি সৃষ্টি করতে চায়। সিলেট স্থানীয় নির্বাচন। এটা এমন কোন নির্বাচন না। জামায়াত তাদের একজন দলীয় প্রার্থী দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, তাদের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসতে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সোনা চুরির প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, ‘আগে হয়েছে টাকা চুরি। আর এখন হচ্ছে সোনা চুরি! কিন্তু সোনা চুরির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি! এখানে অনিয়ম যে হয়েছে, তাদের সংস্থাগুলোই বলছে এবং অর্থমন্ত্রীও বক্তব্য রেখেছেন। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে একজন মানুষকে সন্দেহভাজনে হিসেবে ‘সেকশন ৫৪’ গ্রেপ্তার করতে অসুবিধাটা কোথায়?’
সোনা চুরির পিছনে ক্ষসতাসীনদের মদদপুষ্ট লোকেরা আছে বলেই সরকার আইনী প্রয়োগের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি নেতা আরো জানান, আইনি লড়াইয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব না হলে রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা হবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ। এতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবীব লিঙ্কন,বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।