1. arifcom24@gmail.com : Arif Uddin : Arif Uddin
  2. admin@khoborbari24.com : arifulweb :
  3. editor@khoborbari24.com : editor : Musfiqur Rahman
  4. hostinger@khoborbari24.com : Hostinger Transfer : Hostinger Transfer
  5. khoborbari@khoborbari24.com : Khoborbari : Khoborbari
  6. khobor@gmail.com : :
বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০১ পূর্বাহ্ন
৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
শিরোনামঃ
পলাশবাড়ীতে আলহাজ্ব ফজলুল হক মন্ডলের ইন্তেকাল : দাফন সম্পন্ন গভীর শোক ও সমবেদনা গাইবান্ধার নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে গণমাধ্যমকর্মীদের পরিচিতি সভা গাইবান্ধায় নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে জেলা জামায়াতে ইসলামীর সৌজন্য সাক্ষাত ফারিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতিকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে পলাশবাড়ীতে মানববন্ধন গাইবান্ধা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে কমিউনিটি সভা পলাশবাড়ীতে কাকতালীয় ইঞ্জিন বিস্ফোরণ ঘটে প্রাইভেট কার ভস্মীভূত সৌভাগ্যক্রমে কোনো অঘটন ঘটেনি পলাশবাড়ীতে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবস পালনের প্রস্তুতিমূলক এবং আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেডের দাবীতে গাইবান্ধায় মানববন্ধন হাসপাতালের বেড থেকেই লাইভে সংবাদ: পেশার প্রতি দায়িত্ববোধে আলোচনায় সাংবাদিক রবিউল ইসলাম স্বচ্ছতা, সেবা ও সততার প্রতীক হতে চাই – এটিএম আজহারুল ইসলাম

আসামে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লাখ মানুষ

  • আপডেট হয়েছে : মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই, ২০১৮
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

ভারতের আসাম রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) সম্পূর্ণ খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৮ জনের নাম। ভারতীয় সময় বেলা দশটায় এই তালিকা ওয়েবসাইট এবং এনআরসি সেবাকেন্দ্রগুলোতে প্রকাশ করা হয়।

১৯৫১ সালের পরে এই প্রথমবার ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিক পঞ্জী হালনাগাদ করা হয় যেন রাজ্যে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করা যায়। আজকের এই তালিকা প্রকাশের পর একমাস সময় দেওয়া হয়েছে দাবি বা আপত্তি জানানোর জন্য। সেইসব দাবী খতিয়ে দেখার পর পূর্ণ নাগরিক পঞ্জী তৈরি হবে। খবর বিবিসি’র

২৫ মার্চ ১৯৭১ এর আগে যারা আসামে এসেছেন বলে নথি প্রমাণ পেশ করতে পারেন নি, তাদের নাম জাতীয় নাগরিক পঞ্জী থেকে বাদ গিয়েছে। অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই নাগরিক পঞ্জী চূড়ান্ত করা হয়, যার কারণে নথি প্রমাণ পেশ না করতে পেরে নিজভূমিতেও পরবাসী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।

চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠবে কী না, এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার মধ্যে আছেন বাংলাভাষী মুসলমানরা নিজেদের নাম নাগরিক পঞ্জীতে থাকা নিয়ে অনিশ্চিত বহু বাঙালী হিন্দু পরিবারও।

শিলচরের দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ-র সম্পাদক তৈমূর রাজা চৌধুরী বলছিলেন, ‘যেভাবে গোটা প্রক্রিয়াটি চালানো হয়েছে, তা দেখে সন্দেহ হওয়ার অবকাশ আছে যে বাংলাভাষীদের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত হচ্ছে। যাতে আসামে থাকতে গেলে একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রভূত্ব মেনেই থাকতে হয়, সেই প্রক্রিয়া চলছে। আসলে গত কয়েকটি জনগণনায় ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বহু বাংলাভাষী মুসলমান, আগে যারা নিজেদের মাতৃভাষা অসমীয়া বলে উল্লেখ করতেন, তারা এখন বাংলাকে মাতৃভাষা বলে জনগণনায় জানিয়েছেন। তাই আসামে বাঙালিদের সংখ্যাটা বেড়ে গেছে।’

তবে যে শক্তিশালী ছাত্র সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বা ‘আসু’-র নেতৃত্বে আশির দশকে রক্তক্ষয়ী আসাম আন্দোলন হয়েছিল এবং যার পরিণতিই ১৯৮৫ এর আসাম চুক্তিতে সরকার সম্মত হয় জাতীয় নাগরিক পঞ্জী হালনাগাদ করতে।

সেই সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ‘আমরা কখনই বাঙালি বিরোধী নই, আর এই প্রক্রিয়াটাও হিন্দু বিরোধী বা মুসলমান বিরোধী নয়। এটা অবৈধ বাংলাদেশীদের চিহ্নিত করার একটা প্রক্রিয়া। বহু অসমীয়া মানুষেরও নাম প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ গেছে।’

কোনও ব্যক্তি বা তার পূর্বপুরুষ যে সত্যিই ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের আগে থেকে আসামে বসবাস করছেন, তা প্রমাণের জন্য ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জী যেমন দেখা হচ্ছে, তেমনই ১৪-১৫টি নথি চাওয়া হচ্ছে। তথ্য মেলানো হয়েছে ভোটার তালিকার সঙ্গেও। পুরাণ ভোটার তালিকা ধরে তৈরি হয়েছে ‘লিগ্যাসি ডেটা’ আর বংশবৃক্ষ।

নানা সময়ে একেকটি কর্তৃপক্ষের তৈরি করা ওইসব একাধিক তালিকায় সমন্বয় না থাকার অভিযোগ করছেন বহু মানুষ। যেমন ভোটার তালিকায় কোনও ব্যক্তির নামের বানান ভুল থেকে গেছে, তাই তিনি যে তার পিতা মাতার সন্তান, সেটা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

‘আমার দাদুর নাম ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জীতে আছে, ১৯৬৬র ভোটার তালিকাতেও আছে। আমাদের জমি জায়গার দলিল, ব্রিটিশ সরকারকে খাজনা দেওয়ার রসিদ সব আছে। তবুও আমাদের গোটা পরিবারের কারও নাম ডিসেম্বরে প্রকাশ হওয়া আংশিক নাগরিক পঞ্জীতে নেই,’ বলছিলেন বাকসা জেলার বাসিন্দা, ছাত্র নেতা ইব্রাহিম আলি।

বিপুল সংখ্যক বিবাহিত নারীরা এই কারণে শঙ্কিত যে, তাদের অনেকেরই জন্ম সার্টিফিকেট নেই। স্কুলেও পড়েন নি, তাই নেই সেই নথিও। দরিদ্র পরিবারের এইসব নারীদের নেই কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। আবার বিয়ের পরে পদবী পরিবর্তন করেছেন, অথচ ‘লিগ্যাসি ডেটা’ অনুযায়ী তার বাবার পদবী আলাদা।

এদিকে বাবারও মৃত্যু হয়েছে, তাই এখন প্রমান করাই কঠিন যে ওই নারীরা সত্যিই তার পিতা-মাতার সন্তান এবং সত্যিকারের ভারতীয় নাগরিক। এরইসঙ্গে রয়েছে ভোটার তালিকায় যাদের ‘ডি-ভোটার’ বা সন্দেহজনক ভোটার বলে চিহ্নিত করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।

একটা সময়ে যদিও অসমীয়া জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলি দাবি করত যে রাজ্যে লক্ষ লক্ষ অবৈধ বাংলাদেশী বসবাস করছেন, এবং ভোটার তালিকায় নামও তুলে ফেলেছেন। ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু হয় ‘ডি-ভোটার’ চিহ্নিতকরণ শুরিু হয়।

কেউ পর পর বেশ কয়েকবার ভোট না দিলে অথবা অন্য গ্রামে চলে গিয়ে থাকলে তাদের ‘ডি ভোটার’ বলে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছিল। তাদের নামের তালিকা সীমান্ত পুলিশকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং মামলা রুজু হয় ‘ফরেনার্স ট্রাইবুনাল’ বা বিদেশী চিহ্নিতকরণের ট্রাইবুনালে। সেখানে নিজেকেই তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হয় যে তিনি সত্যিই বৈধ ভারতীয় নাগরিক।

বঙ্গাইগাঁও জেলার বাসিন্দা ও সারা আসাম বাঙালী ছাত্র-যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট ভাওয়াল বিবিসিকে বলছিলেন, ‘ট্রাইবুনালে একদিন হাজিরা না দিলেই একতরফাভাবে ‘বিদেশি’ বলে রায় দিয়ে দেওয়া হয়। যে সীমান্ত পুলিশ হয়তো আগে নোটিশই ধরায়নি, ‘ডি ভোটার’কে পলাতক বলে দেখিয়ে এসেছে, সেই পুলিশই রায় হওয়ার আধঘন্টার মধ্যেই খুঁজে পায় সেই মানুষটিকে। ছবি নিয়ে থানায় যেতে বলা হয় আর সেখান থেকে বন্দী শিবিরে।’

বিদেশি বলে চিহ্নিত হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৯০০ মানুষ আসামের বিভিন্ন বন্দী শিবিরে আটক রয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই বৈধ নাগরিক বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

এরকম ঘটনাও বিবিসি এর আগে প্রতিবেদন করেছে, যেখানে ১০২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করে বন্দী শিবিরে আটক রাখা হয়েছিল।

কিছু অবশ্য সত্যিই বাংলাদেশি নাগরিক, যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। এরকম ৫২জনকে রবিবারই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে আসাম থেকে। তাদের নাগরিকত্ব বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত করার পরেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে আসাম সরকার।

অন্যদিকে প্রাথমিকভাবে কয়েক লাখ মানুষকে ‘ডি ভোটার’ বলে চিহ্নিত করা হলেও সেই সংখ্যাটা ২১ বছর পরে নেমে এসেছে এক লক্ষ ১৩ হাজারের কাছে।

‘ডি ভোটার’ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার আবেদন করারই সুযোগ পান নি। আবার আদালতের নির্দেশে ডি ভোটারদের পরিবারের অন্য সদস্যদের নামও জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে তোলা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

আবার বিদেশি ট্রাইবুনাল কাউকে বৈধ ভারতীয় বলে রায় দেওয়ার পরেও নির্বাচন কমিশন পুণরায় ‘ডি ভোটার’ নোটিশ পাঠিয়েছে, এমন নজিরও রয়েছে আসামে।

নাগরিক পঞ্জী তৈরী করার দায়িত্বে রয়েছেন আসামের যে কর্মকর্তা, সেই প্রতীক হাজেলা বিবিসিকে চূড়ান্ত খসড়া তালিকার ব্যাপারে কিছু তথ্য দিয়েছেন:

• প্রায় তিন কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার আবেদন জানিয়েছিলেন। সঙ্গে জমা পড়েছে সাড়ে ছয় কোটিরও বেশী নথি। সমস্ত নথিই স্ক্যান করে ডিজিটাইজ করা হয়েছে।

• ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যাচাইয়ের জন্য ৫ লক্ষ ৭৭ হাজার নথি পাঠানো হয়েছে। ৩৭টি দেশেও নথি গেছে তথ্য যাচাইয়ের জন্য।

• ৪৮ হাজার কর্মী – অফিসার ২০১৫ সাল থেকে এই নাগরিক পঞ্জী প্রস্তুতের কাজ করছেন।

• বৈধ নাগরিকদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য ৫৯ টি ভিন্ন ভিন্ন সফটওয়্যার তৈরী করা হয়েছে।

নাগরিক পঞ্জী প্রকাশ নিয়ে যে অশান্তি ছড়াতে পারে, সেই আশঙ্কা করছে পুলিশ। তাই ২২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্যে। সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। রয়েছে পুলিশী নজরদারীও।

তবে গত কয়েকদিনে কেন্দ্রীয় সরকার আর রাজ্য সরকার বারে বারে প্রচার করছে যে, নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়ায় নাম না থাকা মানেই কাউকে বিদেশি অথবা অবৈধ বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা নয়। নিজেদের নাগরিকত্বের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করার আরও একমাস সময় পাওয়া যাবে। আর এখনই কাউকে বিদেশি বলে আটক করা হবে না।

খবরটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এরকম আরও খবর
© All rights reserved © 2025

কারিগরি সহযোগিতায় Pigeon Soft