
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা আগেই বলেছি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর আয়ুষ্কাল হবে ১৫ বছর। তাই আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ২ নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি।
এরপর আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ৩ নিয়ে কাজ করবো।’ বুধবার সকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রোস্তম আলী ফরাজীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু বলেন, স্যাটেলাইট-১ নিয়ে বিএনপি অর্বাচীনের মতো কথা বলছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মালিকানা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মহিলা সংসদ সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পীর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা স্যাটেলাইটের আয়ুষ্কাল হয় ১৫ বছর। তাই আমার বলছি সার্কভুক্ত সকল দেশে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ভাড়া দিতে পারবো, আমরা টাকা পাব। সুতরাং দুই ব্যক্তি কিভাবে এর মালিক হলো এটা আমার বুঝে আসে না।’
‘কোনো মানুষের যদি দেশের প্রতি ভালোবাসা থাকে, যদি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে তাহলে কেউ ঐ ধরনের মন্তব্য করতে পারে না। এমন একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হলো যেখানে দেশে বিদেশে সব জায়গায় খুশিতে উদ্দেলিত। বিএনপির কেন দুঃখ?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশই বহু আগে স্যাটেলাইট উক্ষেপণ করেছে, আমরা পারিনি কেন? তাদের (বিএনপির) চিন্তা ভাবনা এত সংকীর্ণ যে যখনই এই অঞ্চলে সাবমেরিন এসেছে, তখন ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড সব দেশ নিয়েছে। তখন বিনা পয়সায় দিয়েছে। বলা হয়েছিল বিনা পয়সায় সংযোগ দিয়ে দিবে শুধু ভাড়া বাবদ ৬ হাজার ডলার দিতে হবে।’
‘সে সময় বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। তখন তারা বলেছিল না এটা আমরা নিবো না। এটা নিলে দেশের সব তথ্য বাইরে পাচার হয়ে যাবে। জানি না বিএনপির কাছে সব সময় কি এমন তথ্য থাকে যা পাচার হয়ে যাবে। এই কথা বলে আমাদেরকে বিশ্বের সাথে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল।’
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সাবমেরিন সংযোগ করে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মির্জা ফখরুলের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের অর্বাচীনের মতো কথা বলা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এতেই বুঝা যায় তারা আসলে দেশকে ভালোবাসে না।’
‘আমরা গত ৯ বছরে যেমন সমুদ্রের তলদেশে পৌঁছাতে পেরেছি, তেমনি মহাকাশেও পৌঁছাতে পেরেছি। সুতরাং আমি বলবো বাংলাদেশের মার্যাদাকে উচ্চ আসনে পৌঁছে দিতে পেরেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জাতির পিতা ৭ মার্চে ভাষণে বলেছিলেন ৭ কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। তাই বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
অপর সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্পেস পাওয়ার পরই স্যাটেলাইট নির্মাণ কাজ শুরু করি। যা এখন তার জায়গায় পৌঁছে গেছে। এখন কাজ শুরু হয়ে যাবে।’
‘একবার স্যাটেলাইটের কাজ শুরু হলে মানুষ এর সুফল পেতে শুরু করবে। সুতরাং এটি নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারই এটার (বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১) মালিক। যেভাবে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হয়। আমরা ইতোমধ্যে এর ব্যবহারে কথা বলেছি। এটা যারাই ভাড়া নিবে যেটুকু ভাড়া নিবে সেটুকুরই মালিক হবে।’
‘দুই ব্যক্তি তো এর মালিক হতে পারে না। এ ধরনের মন্তব্য করাটাও অত্যন্ত লজ্জাজনক। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার আছে। বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ২০টি, বাকী ২০টি আমরা ভাড়া দিতে পারবো।’