
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় আসর আইপিএল। এবার নিয়ে এগার বার দেশটি এ আসরগুলোর আয়োজন করে।
এবারের আসরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কাপ ছিনিয়ে নেয় ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায় মহেন্দ্র সিং ধোনির দল চেন্নাই সুপার কিংস।
আসর জুড়েই চেন্নাই সুপার কিংস বড় ধাঁধা হয়েছিল সাকিবদের সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের জন্য। রবিবার (২৭ মে) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আইপিএলের ফাইনালে মাঠে নামার আগে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেলেছিল সাকিব আল হাসানদের হায়দ্রাবাদ।
লিগ পর্বে দুটি ও প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচ, তিনটিতেই হার হায়দ্রাবাদের। কিন্তু ফাইনালে সেই গল্পটা বদলাবে এই স্বপ্ন ছিল সাকিবদের। কিন্তু দিন শেষে গল্পটা সেই একই বিষাদের হয়ে থাকল ২০১৬ আসরের চ্যাম্পিয়নদের জন্য। হায়দ্রাবাদকে ৮ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো আইপিএলের শিরোপা ঘরে তুললো চেন্নাই।
এদিন টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৮ রান করে হায়দ্রাবাদ। জবাবে শেন ওয়াটসনের সেঞ্চুরিতে ১৮.৩ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় চেন্নাই। তাতে দুই বছরের নির্বাসন কাটিয়ে ফিরেই শিরোপার স্বাদ পেল দলটি। ফাইনালে ম্যাচ সেরা হয়েছে শেন ওয়াটসন।
এর আগে ২০১০ ও ২০১১ সালে টানা দুটি আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চেন্নাই। মুম্বাইয়ের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে তিনবার আইপিএলে শিরোপার কৃতিত্ব দেখাল ধোনির নেতৃত্বাধীন দলটি।
এবারের আসরে হায়দ্রাবাদের বোলিং ইউনিট ছিল দুর্দান্ত। শুরুর দিকে স্বল্প পুঁজি নিয়েও অনেক ম্যাচই জিতে গেছে দলটি। লিগ পর্ব তারা শেষ করেছিল শীর্ষে থেকে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা বোলারদের পারফরম্যান্সে ভর করেই। চেন্নাইকে ১৭৯ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পর তাই দুর্দান্ত একটা ম্যাচ আশা করেছিল সবাই। কিন্তু রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার, সাকিব আল হাসানরা এদিন জ্বলে উঠতে পারলেন না।
অবশ্য রশিদ-সাকিবদেরই বা কী দোষ। দিনটাতো তাদের হতে দিলেন না আসলে ওয়াটসন। প্রথম ১০ বলে যিনি রানের খাতাই খুলতে পারলেন না, সেই তিনিই খেললেন ৫৭ বলে ১১৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। হায়দ্রাবাদের বোলিং ইউনিট তাই ম্লান হয়ে গেল এদিন। যদিও দলীয় ১৬ রানে ফ্যাফ ডু প্লেসি (১০) ফিরে গিয়েছিলেন সন্দিপ শর্মার বলে। তবে সুরেশ রায়নাকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ১১৭ রান যোগ করেন ওয়াটসন। ম্যাচটা হায়দ্রাবাদের হাত থেকে বেরিয়ে যায় তখনই। রায়না ২৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রান করেছেন। এরপর বাকি কাজ সারতে ওয়াটসনকে সঙ্গ দিয়েছেন আম্বতি রাউডু্। ওয়াটসনের ইনিংসে ছিল ৮ ছক্কা ও ১১ চার। এটি এবারের আসরে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। উইনিং রানটি এসেছে রাইডুর ব্যাট থেকে। ব্র্যাথওয়েটকে চার মেরে দলকে শিরোপার আনন্দে ভাসান রাইডু। হায়দ্রাবাদের হয়ে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন সন্দিপ শর্মা ও ব্র্যাথওয়েট।
এর আগে শিখর ধাওয়ানের ২৬, কেন উলিয়ামসনের ৪৭, সাকিবের ২৩, ইউসুফ পাঠানের অপরাজিত ৪৫ ও ব্র্যাথওয়েটের ২১ রানে চ্যালেঞ্জিং পুঁজিটা গড়েছিল হায়দ্রাবাদ। যদিও ওয়াটসনের ইনিংসে সেই পুঁজি আর চেন্নাইয়ের জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়নি। চেন্নাইয়ের পক্ষে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিদি, শার্দুল ঠাকুর, করন শর্মা, ডোয়াইন ব্রাভো ও রবিন্দ্র জাদেজা। ফাইনালের মঞ্চে সাকিবের ব্যাট থেকে কার্যকরী ২৩ রান এলেও বল হাতে ১ ওভারের বেশি সুযোগ পাননি। ১ ওভারে ১৫ রান খরচা করেন সাকিব। তবে ব্যাট এবং বল হাতে এবার নিজের সেরা আইপিএল কাটিয়েছেন সাকিব। হায়দ্রাবাদের হয়ে সবগুলো ম্যাচই খেলেছেন। ১৭ ম্যাচে ১৩ ইনিংসে এবার তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৩৯ রান। আর উইকেট নিয়েছেন ১৪টি।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে